মঙ্গলবার
২রা ডিসেম্বর, ২০২৫
১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

লাখ টন চাল কিনতে টেন্ডার আহ্বান পাকিস্তানের

Fresh News রিপোর্ট
নভেম্বর ২৪, ২০২৫
১০:২২ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশে সরবরাহের উদ্দেশ্যে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ১ লাখ টন চাল কেনার লক্ষ্যে টেন্ডার আহ্বান করেছে পাকিস্তানের ট্রেডিং করপোরেশন (টিসিপি)। পাকিস্তানি দৈনিক ডনের প্রতিবেদনে জানা গেছে, সোমবার এই দরপত্র প্রকাশ্যে আসে।

দীর্ঘদিনের টানাপোড়েনের পর ২০২৪ সালের আগস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নতির পথে রয়েছে বলে ডনের প্রতিবেদন উল্লেখ করেছে। এই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে রপ্তানির জন্য স্থানীয় বাজার থেকেই ব্যাপক পরিমাণ চাল কেনার উদ্যোগ নিয়েছে।

২০ নভেম্বর প্রকাশিত টেন্ডার অনুযায়ী, প্রস্তাব জমা দেওয়ার শেষ সময় ২৮ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১১টা। টিসিপি আলাদাভাবে সিল করা দরপত্র আহ্বান করেছে বিভিন্ন কোম্পানি, পার্টনারশিপ এবং একক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান থেকে। টেন্ডার অনুসারে, ১ লাখ টন লম্বা দানার সাদা চাল (আইআরআরআই-৬) কেনা হবে, যা পরে প্যাকেটজাত করে করাচি বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে রপ্তানি করা হবে।

দরপত্রে সর্বনিম্ন ২৫ হাজার টন এবং সর্বোচ্চ ১ লাখ টন পর্যন্ত প্রস্তাব নেওয়া হবে। দরপ্রস্তাব জমা দেওয়ার পর ২১ কার্যদিবস মূল্য প্রস্তাব বৈধ থাকতে হবে। চুক্তির ৪৫ দিনের মধ্যে জাহাজীকরণের জন্য চাল প্রস্তুত করে দিতে হবে।

চালের মান সম্পর্কে কঠোর শর্তও দেওয়া হয়েছে—ফসল অবশ্যই সর্বশেষ মৌসুমের হতে হবে এবং মানুষের ভক্ষণ উপযোগী হওয়া চাই। কোনো ধরনের দুর্গন্ধ, পোকামাকড়, ছত্রাক, বিষাক্ত আগাছার বীজ বা সংক্রমণের চিহ্ন থাকলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।

রয়টার্সের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এই টেন্ডারকে ব্যবসায়ীরা পাকিস্তানি চালকে বাংলাদেশের আমদানির তালিকায় সুনির্দিষ্টভাবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, বাংলাদেশ সম্প্রতি যে চুল্লি চাল কিনেছে তার কিছু অংশ ভারতীয় চাল হতে পারে।

এদিকে বাংলাদেশও সোমবার আরও একটি নতুন চাল আমদানির টেন্ডার ঘোষণা করেছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে ধারাবাহিকভাবে চাল আমদানিতে নীতি গ্রহণ করেছে সরকার।

সরকারি পর্যায়ে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সরাসরি বাণিজ্য শুরু হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে, যখন বাংলাদেশ ৫০ হাজার টন চাল আমদানি করে। গত মাসে অনুষ্ঠিত নবম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠকে করাচি পোর্ট ট্রাস্টকে বাংলাদেশসহ আঞ্চলিক দেশগুলোর বাণিজ্য প্রবেশদ্বার হিসেবে ব্যবহারের প্রস্তাব দেয় পাকিস্তান।

এদিকে পাকিস্তানের নিজস্ব চাল রপ্তানি চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ২৮ শতাংশ কমেছে। এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, ভারতের রপ্তানি পুনরায় চালু হওয়া, বাসমতির ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য তুলে নেওয়া এবং রপ্তানিতে শূন্য শুল্ক আরোপের কারণেই পাকিস্তানের রপ্তানির ওপর চাপ তৈরি হয়েছে। তবে বিশ্ববাজারে সরাসরি মূল্য প্রতিযোগিতার বদলে বাজার ধরে রাখার কৌশল নেওয়ায় ভারতের ফিরে আসা বিশেষ প্রভাব ফেলেনি।

এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের বিভিন্ন পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করায় পাকিস্তান মার্কিন বাজারে রপ্তানি বৃদ্ধির সুযোগ পাচ্ছে। ভলজা গ্লোবাল ট্রেড প্ল্যাটফর্মের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে পাকিস্তানের মোট বাসমতি রপ্তানির প্রায় ২৪ শতাংশই গেছে যুক্তরাষ্ট্রে।