মঙ্গলবার
২রা ডিসেম্বর, ২০২৫
১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চড়া পেঁয়াজের দাম

Fresh News রিপোর্ট
নভেম্বর ২৯, ২০২৫
২:৫০ অপরাহ্ণ

দেশের বাজারে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। রান্নার অপরিহার্য এই উপাদানের দামে স্থিতি না আসায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছেন স্বল্প আয়ের মানুষ। বাজারে নিত্যপণ্যের লাগামহীন দামে সরকারের নীতিকেই দায়ী করছেন অনেকে, অন্যদিকে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা দুষছেন তাদের নিজেদের নীতিকে – কারণ সেখানে পেঁয়াজের দাম তলানিতে।

রাজধানীর বাজারগুলোতে শনিবার সকালে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। ছোট, মাঝারি ও বড়—তিন ধরনের পেঁয়াজের দামই তিন সপ্তাহ ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে। অথচ পাশের দেশ ভারতে একই সময়ে পেঁয়াজ মিলছে ২৫–৩০ টাকায়।

মুগদা বাজারে কর্মজীবী রাবেকা খাতুন বলেন, কম আয়ের মানুষদের জীবনযুদ্ধে পেঁয়াজের দাম যেন বাড়তি বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার ভাষায়, “কারও সরকারে আসলেই আমাদের কথা কেউ ভাবে না। দাম বাড়লে কষ্টটা আমাদেরই।”

সরকার বলছে, দেশে পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই। কিন্তু স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, সরবরাহ কম থাকায় দাম কমছে না। ভারত থেকে আমদানির সম্ভাবনা তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত অনুমোদন মেলেনি। ফলে আমদানি বন্ধ থাকায় বাজারে বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে।

এদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত বাংলাদেশে ৭ লাখ ২৪ হাজার টন পেঁয়াজ রপ্তানি করলেও চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে বাংলাদেশ কিনেছে মাত্র ১২ হাজার ৯০০ টন। স্থানীয় কৃষককে রক্ষার যুক্তিতে আমদানি বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানাচ্ছে সরকার।

কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, কিছু ব্যবসায়ী পেঁয়াজ আমদানির জন্য চাপ দিলেও কৃষকের স্বার্থেই আমদানি বন্ধ রয়েছে। তার দাবি, নতুন উদ্ভাবিত গ্রীষ্মকালীন জাতসহ মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করেছে, তাই দামের আর বাড়ার সম্ভাবনা নেই।

তবে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি বছরই মৌসুমের শেষে পেঁয়াজের দামে অস্থিরতা দেখা যায়। সংরক্ষণের অভাব, মধ্যস্বত্বভোগী, বৃষ্টিজনিত ক্ষতি ও আমদানি বন্ধ থাকার বিষয়গুলো এ বছর পরিস্থিতি আরও কঠিন করেছে। নতুন পেঁয়াজ আসার আগ পর্যন্ত বাজার স্থিতি ফিরবে কি না—সেই অপেক্ষায় ক্রেতারা।