শুক্রবার
৬ই জুন, ২০২৫
২৩শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

প্রবাসে বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃত্যু রেকর্ড ছাড়াল, ৩১ শতাংশ অস্বাভাবিক মৃত্যু

Fresh News রিপোর্ট
মে ৩০, ২০২৫
৮:২২ পূর্বাহ্ণ

চলতি বছরে প্রবাসে মৃত্যুবরণকারী বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা নতুন রেকর্ড ছুঁয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮১৩টি মৃতদেহ দেশে ফেরত এসেছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ৫.৭ শতাংশ বেশি। এদের মধ্যে অস্বাভাবিক মৃত্যুর হার উদ্বেগজনকভাবে ৩১ শতাংশ।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিট (রামরু)-এর যৌথ গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ঢাকায় আয়োজিত এক সংলাপে গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রবাসে মারা যাওয়া কর্মীদের মধ্যে ১৬ শতাংশ দুর্ঘটনায় এবং ১৫ শতাংশ আত্মহত্যা করেছেন। স্বাভাবিকভাবে মৃত্যু হয়েছে ২৮ শতাংশের। বাকি মৃত্যুর পেছনে রয়েছে বিভিন্ন অসুস্থতা ও অস্পষ্ট কারণ।

২০১৭ থেকে ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত বিশ্লেষিত ৫৫৪ জন প্রবাসী মৃতের গড় বয়স মাত্র ৩৭ বছর, যা মৃত্যুদের পেছনে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো কারণ থাকার সম্ভাবনা আরও জোরালো করে।

সংলাপে জানানো হয়, গত ১২ বছরে বিদেশে প্রাণ হারিয়েছেন মোট ৪০ হাজার ৭১৩ জন বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিক। এর মধ্যে অনেকের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিয়ে পরিবারের মধ্যে সন্দেহ রয়েছে। গবেষণা অনুযায়ী, ৪৮ শতাংশ পরিবার মৃত্যুসনদে লেখা কারণকে বিশ্বাস করে না। অনেক সময় মৃতদেহে স্পষ্ট আঘাতের চিহ্ন থাকার পরও তাকে ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’ বলা হয়, অথচ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ময়নাতদন্ত করা হয় না।

মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াতেও রয়েছে নানা জটিলতা ও অব্যবস্থাপনা। ঢাকার বিমানবন্দরে মরদেহ গ্রহণের সময় প্রায় ৮০ শতাংশ পরিবার প্রশাসনিক জটিলতায় পড়ছে, যা তাদের মানসিকভাবে আরও বিপর্যস্ত করে তোলে।

রামরুর ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, “এত বড় মৃত্যুর সংখ্যা, অথচ সরকার এখনো পর্যন্ত কোনো কার্যকর অনুসন্ধান শুরু করেনি। এটি বড় ধরনের অবহেলা।”

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কর্মজীবনের শুরুতেই এই মৃত্যুর প্রবণতা গভীরভাবে উদ্বেগজনক এবং বিদেশগামী শ্রমিকদের জন্য সরকারের তদারকি ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কার প্রয়োজন।