শুক্রবার
৬ই জুন, ২০২৫
২৩শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

আসামে বিদেশি ঘোষণা দিয়ে সীমান্তে পুশব্যাক, হাইকোর্টে মামলা

Fresh News রিপোর্ট
মে ৩১, ২০২৫
৮:৪৮ অপরাহ্ণ

আসামের মরিগাঁও জেলার নুরুল ইসলামসহ ১৪ জনকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করার অভিযোগে তার স্ত্রী নূরজাহান বেগম গুয়াহাটি হাইকোর্টে মামলা করেছেন, যেখানে আদালতের নির্দেশ মেনে জামিনে থাকা সত্ত্বেও নুরুলকে অবৈধভাবে সীমান্তে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটে ২৭ মে, যখন বিএসএফ পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম সীমান্ত দিয়ে ওই ১৪ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়। পুশব্যাক হওয়া নুরুল ইসলামের স্ত্রী আদালতের কাছে তার মুক্তির আবেদন করেছেন এবং পূর্ববর্তী জামিনের ভিত্তিতে তাকে ফিরিয়ে আনার নির্দেশনা চেয়েছেন। আইনজীবী সামিনুল হক জানান, নুরুলকে আদালতের বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় ফিরিয়ে আনা উচিত। তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনাল একতরফা সিদ্ধান্তে পরিবারটিকে ‘বিদেশি’ ঘোষণা করেছিল, অথচ তাদের ভোটার তালিকা, আধার কার্ড ও সরকারি প্রকল্পে নাম রয়েছে।

নুরুলের ভাই রমজান আলী জানান, ২৩ মে রাতে থানায় ডেকে নিয়ে যাচাই-বাছাই শেষে নুরুলকে রাতেই আটক রাখা হয় এবং পরদিন সকালে তাকে গোয়ালপাড়া ট্রানজিট ক্যাম্পে পাঠানো হয়। ২৭ মে সকালে বাংলাদেশের একটি নম্বর থেকে ফোন পেয়ে তিনি জানতে পারেন, নুরুলকে রাতেই সীমান্ত পার করে দেওয়া হয়েছে। এরপর তাকে কোথায় রাখা হয়েছে, সে বিষয়ে কেউ কিছু জানায়নি।

গুয়াহাটি হাইকোর্ট এ ঘটনায় ভারত ও আসাম সরকারকে ৪ জুনের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলেছে। মরিগাঁওয়ের আরও দুই বাসিন্দা আবু বক্কর সিদ্দিকী ও আকবর আলী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায়ও আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। এখনো আসাম সরকার বা পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

অন্যান্য যাদের পুশব্যাক করা হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন শিক্ষক মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম, মানিকজান বেগম, মরম আলী, সাবিনা বেগম ও সোনাবানু বেগম। তাদের পরিবার দাবি করেছে, ২৭ মে পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে যোগাযোগ সম্ভব হলেও এরপর থেকে কোনো খোঁজ নেই।

এ বিষয়ে সমাজকর্মী আমান ওয়াদুদ বলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী একবার জামিনে মুক্ত হলে আবার আটক করা যায় না। অথচ সরকার এই নিয়ম মানেনি। তিনি অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্র যে আচরণ করেছিল তার সমালোচনা করলেও এখন ভারত একই পথে হাঁটছে।

আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য তপোধীর ভট্টাচার্য সরকারের কাছে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়ে বলেন, একই সম্প্রদায়ের লোকদের টার্গেট করে এই ধরনের পদক্ষেপ গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পরিপন্থী।

তবে বিজেপি নেতারা দাবি করছেন, ভোটার কার্ড ও আধার কার্ড টাকা দিয়ে বানানো যায়, তাই এসব নথির ভিত্তিতে কারো নাগরিকত্ব নির্ধারণ করা যায় না। এখন আদালতের রায়ের দিকেই তাকিয়ে আছে পরিবারগুলো।