ভারত সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশিদের ঠেলে পাঠানোর (পুশ ইন) ঘটনা অব্যাহত থাকায় বিষয়টি নিয়ে নতুন করে চিঠি দেবে বাংলাদেশ সরকার। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে ভারতের সঙ্গে কনস্যুলার পদ্ধতির আওতায় কাজ করতে চায় ঢাকা।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তৌহিদ হোসেন বলেন, সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন এখনো হচ্ছে, এবং ফিজিক্যালি তা ঠেকানো সম্ভব নয়। তবে এ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে চিঠি চালাচালি চলছে এবং আজ বা আগামীকাল নতুন চিঠি পাঠানো হবে।
তিনি জানান, ভারতের কিছু অভিযোগ রয়েছে যে, বাংলাদেশ কিছু তালিকা অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। কিন্তু বাংলাদেশও চেক করে দেখেছে, পুরনো তালিকা অনুযায়ী অনেককে ইতোমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে। তাই উভয়পক্ষের অবস্থান মূল্যায়ন করে নিয়মতান্ত্রিক সমাধান চায় ঢাকা।
এ বিষয়ে কনস্যুলার ডায়ালগের মাধ্যমে সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব বলে মনে করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। বাস্তবতা বিবেচনায় শিগগিরই পদ্ধতিগত কিছু প্রস্তাবসহ নতুন চিঠি পাঠানোর কথাও জানান তিনি।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ভারত এরই মধ্যে দুই হাজারের বেশি মানুষকে পুশ ইন করেছে। ভারত দাবি করে, তারা অবৈধভাবে ভারতে অবস্থান করছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশ চায়, এ ধরনের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া যেন আনুষ্ঠানিক পদ্ধতি মেনেই হয়।
এ নিয়ে দিল্লিতে পাঁচটি চিঠি ইতোমধ্যে পাঠানো হয়েছে, আরেকটি নতুন চিঠি শিগগিরই পাঠানো হবে।
এদিকে, শেখ হাসিনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ডিসেম্বর মাসে যে চিঠি পাঠানো হয়েছিল, তার কোনো জবাব এখনো আসেনি। তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, প্রয়োজন হলে দ্বিতীয় চিঠি পাঠানো হবে।
সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যার ইস্যুতে সরকারের নমনীয় অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারের নীতি পরিবর্তন হয়নি। সীমান্তে গুলি করে মানুষ হত্যা মেনে নেওয়া সম্ভব নয় এবং এ বিষয়ে প্রতিবাদ চলমান রয়েছে।
ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারতের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বরং নির্ভরশীলতা কমেছে। পণ্য পরিবহনে বিকল্প ব্যবস্থা চালু হয়েছে এবং রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হয়নি। একইসঙ্গে বাংলাদেশও ভারত থেকে সুতা আমদানি নিষিদ্ধ করেছে।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে কুলাউড়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে একজন বাংলাদেশি তরুণ নিহত হন এবং ভারতের পক্ষ থেকে তৈরি পোশাক আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এতে করে দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত ও বাণিজ্যিক ইস্যুতে উত্তেজনা নতুনভাবে চর্চায় এসেছে।