ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটিকে কেন্দ্র করে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে মানুষের ঢল। কেউ সড়কপথে, কেউ রেলপথে, আবার কেউ বেছে নিচ্ছেন অপেক্ষাকৃত স্বস্তিদায়ক নৌপথ। বুধবার (৪ জুন) সন্ধ্যার পর থেকেই এমন দৃশ্য দেখা গেছে রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে, যেখানে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলমুখী যাত্রীদের চাপ বেড়েছে চোখে পড়ার মতো।
বিকেল থেকেই সদরঘাটে যাত্রীদের ভিড় বাড়তে শুরু করে। সন্ধ্যার সঙ্গে সঙ্গে টার্মিনাল পুরোপুরি যাত্রীতে ভরে ওঠে। নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ ভিড় করেছেন বাড়ির পথে রওনা দিতে। অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে লঞ্চে যাত্রাকে আরামদায়ক বললেও, কম আয়ের মানুষদের জন্য ভাড়া কিছুটা বেশি বলে অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ।
রিকশাচালক গফফার জানান, রোজার ঈদে বাড়ি যেতে না পারলেও এবার সন্তানদের নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু আগে যেখানে জনপ্রতি ৩০০ টাকা ভাড়া লাগত, এখন সেখানে ৪০০ টাকা দিতে হচ্ছে। সীমিত আয়ের মানুষদের জন্য এটি বাড়তি চাপ তৈরি করছে বলে তিনি মনে করেন।
বরিশালগামী আরেক যাত্রী সোলাইমান বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে আগের মতো ভিড় না থাকলেও ঈদের আগে পরিস্থিতি আবার বদলেছে। যানজটের কারণে অনেকেই হেঁটে সদরঘাটে পৌঁছেছেন। তারপরও লঞ্চযাত্রাকে তুলনামূলকভাবে স্বস্তিদায়ক বলেই মনে করছেন তিনি।
কুয়াকাটা-২ লঞ্চের সুপারভাইজার তুষার আহমেদ জানান, অফিস-আদালত বন্ধ থাকায় আজ যাত্রীচাপ বেড়েছে এবং আগামীকাল তা আরও বাড়বে। তার মতে, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ এখনো লঞ্চকে গুরুত্ব দিচ্ছে, কারণ যাত্রা আরামদায়ক এবং ভাড়া তুলনামূলক কম।
ভাড়া নির্ধারণ নিয়ে সদরঘাট লঞ্চ মালিক সমিতির সদস্যসচিব সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী জানিয়েছেন, ঈদ উপলক্ষে নতুন কোনো ভাড়া বাড়ানো হয়নি বা অতিরিক্ত লঞ্চও নামানো হয়নি। বর্তমানে ৩৮টি রুটে ১২০টি লঞ্চ রোটেশনে চলাচল করছে। তিনি দাবি করেন, অনেক সময় সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কমেও ভাড়া নেওয়া হয়।
সদরঘাট এলাকার নিরাপত্তা বিষয়ে কোতোয়ালি-সূত্রাপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ ফজলুল হক জানান, যাত্রীদের নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করতে পুলিশ বাহিনী পুরোপুরি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
টার্মিনাল কন্ট্রোল অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাত ৮টা পর্যন্ত সদরঘাট থেকে ৬৯টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে এবং রাত ১২টা পর্যন্ত মোট ৯০টি লঞ্চ যাত্রা করবে বলে জানানো হয়েছে।