পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের প্রবাহে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। জুন মাসের প্রথম তিন দিনেই দেশে এসেছে ৬০ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭ হাজার ৪২৯ কোটি টাকারও বেশি। এই অর্থপ্রবাহ কোরবানির পশু কেনাসহ পরিবারের অতিরিক্ত ব্যয় মেটাতে সহায়তা করছে এবং বাজারে নগদ টাকার সরবরাহ বাড়িয়ে দিচ্ছে নতুন মাত্রা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ঈদের সময় সাধারণত প্রবাসীরা পরিবারের জন্য বাড়তি খরচ মেটাতে বেশি পরিমাণ অর্থ দেশে পাঠান। কোরবানির পশু, নতুন পোশাক, উপহার সামগ্রী ও নিকটজনদের জন্য কেনাকাটায় এই অর্থ ব্যয় হয়।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রেমিট্যান্স শুধু প্রবাসীদের পরিবারের আয় বাড়ায় না, এটি দেশের গ্রামীণ অর্থনীতিকেও চাঙা করে। নগদ অর্থের প্রবাহ বৃদ্ধির ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আসে এবং আর্থিক স্থিতিশীলতায় সহায়ক ভূমিকা রাখে।
সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রবাসীদের বৈধ পথে অর্থ পাঠাতে উৎসাহিত করতে নানা প্রণোদনা চালু রেখেছে। পাশাপাশি ডিজিটাল চ্যানেল সহজ হওয়ায় হুন্ডির পরিবর্তে অনেকেই এখন বৈধ ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে টাকা পাঠাচ্ছেন।
গত মে মাসে দেশে এসেছে ২৯৭ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স, যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাসিক রেমিট্যান্স। এর আগের সর্বোচ্চ ছিল চলতি বছরের মার্চে, ঈদুল ফিতরের সময়ে—যখন রেমিট্যান্স এসেছিল ৩২৯ কোটি ডলার।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে জুন ৩ তারিখ পর্যন্ত মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ৮১১ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১৬৬ কোটি ডলার।
ঈদ উপলক্ষে এই অর্থপ্রবাহ দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, এই ধারা বজায় থাকলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও শক্তিশালী হবে এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।
