শুক্রবার
৬ই জুন, ২০২৫
২৩শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

ভোলায় জমজমাট কোরবানির হাট, কোটি টাকার বাণিজ্যের সম্ভাবনা

Fresh News রিপোর্ট
জুন ৫, ২০২৫
৮:৩০ পূর্বাহ্ণ

পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে ভোলার কোরবানির পশুর হাটগুলোতে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে কেনাবেচা। জেলার স্থায়ী ও অস্থায়ী হাটগুলোতে এখন ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে মুখরিত পরিবেশ। তবে দাম নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ পাচ্ছেন কাঙ্ক্ষিত মূল্য, কেউ অপেক্ষা করছেন শেষ মুহূর্তের দাম বৃদ্ধির আশায়।

জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলার সাতটি উপজেলায় স্থায়ী পশুর হাট রয়েছে ৬৯টি এবং অস্থায়ী হাট রয়েছে ৭৮টি। এ বছর কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ১ লাখ ২ হাজার ৭৬৯টি পশু, যেখানে চাহিদা রয়েছে ৯০ হাজার ২৫৩টির। ফলে উদ্বৃত্ত রয়েছে ১২ হাজার ৫১৬টি পশু।

ভোলা সদর উপজেলার শতবর্ষী গজারিয়া হাটে সরেজমিনে দেখা গেছে, ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে চলছে তীব্র দরকষাকষি। কেউ কেউ তাদের পছন্দের পশু কিনে ফেলেছেন, আবার অনেকেই অপেক্ষা করছেন দাম আরও কমার আশায়।

সদরের আলীনগর ইউনিয়নের খামারি মো. জাহাঙ্গীর ৯ মণ ওজনের একটি ষাড় নিয়ে হাটে এসেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তিন বছর ধরে লালন-পালনের পর আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি করতে চাইলেও ক্রেতারা দিচ্ছেন সর্বোচ্চ ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। তিনি আশাবাদী, শেষের দিকে দাম বাড়বে।

খামারি মো. আনিস ও মো. রানা জানিয়েছেন, গরুর উৎপাদন খরচ বেড়েছে, বিশেষ করে গো-খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে। কিন্তু বাজারে গরুর দাম সে অনুযায়ী বাড়েনি। লাভ না হলেও শুধু খরচ উঠলেই তারা গরু বিক্রি করবেন বলে জানান।

ক্রেতাদের অনেকে বলছেন, ভোলার হাটে পশুর সংকট নেই। ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি থাকায় সেই ধরনের গরুর দাম কিছুটা বেশি হলেও বড় গরুর দাম তুলনামূলক সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। কেউ কেউ মূল্য নিয়ে হতাশ হলেও, অনেকেই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন কেনাকাটা করতে পেরে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম খান জানিয়েছেন, ভোলার কোরবানির পশুর বাজার ঘিরে এবার প্রায় ৭২০ কোটি টাকার বাণিজ্যের সম্ভাবনা রয়েছে। পশুর সেবা নিশ্চিত করতে জেলার প্রতিটি হাটে ২৬টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করছে, যা খামারি ও ক্রেতাদের জন্য বাড়তি স্বস্তির বিষয়।

সবমিলিয়ে, ভোলার কোরবানির হাটগুলোতে উৎসবের আমেজের সঙ্গে জমজমাট হয়ে উঠেছে পশু বিক্রির বাণিজ্যিক দিকটিও।