চার দিনের বৃষ্টির পর রোদ দেখা গেলেও নোয়াখালীতে দুর্ভোগ কাটেনি
টানা চার দিনের পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টির পর শুক্রবার (১১ জুলাই) নোয়াখালীতে দেখা মিলেছে কাঙ্ক্ষিত রোদের। তবে জেলার নিম্নাঞ্চল ও শহরের অনেক এলাকায় এখনো জলাবদ্ধতা ও বন্যার পানি জমে থাকায় জনদুর্ভোগ তীব্র আকারে রয়ে গেছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জেলার ছয়টি উপজেলার ৫৭টি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৭০টি পরিবারের প্রায় ১ লাখ ৯২ হাজার ৫০৩ জন মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দিন পার করছে। কবিরহাট ও সুবর্ণচর উপজেলায় ৪৫টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সুবর্ণচরে একটি ঘর পুরোপুরি ধসে পড়েছে।
মাইজদীর বিভিন্ন এলাকা যেমন লক্ষ্মীনারায়ণপুর, সেন্ট্রাল রোড, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, শিল্পকলা একাডেমি এলাকা, হাকিম কোয়ার্টার, মেথর পল্লি -এসব জায়গায় এখনো রাস্তা ও বাড়িঘর পানির নিচে। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে, কেউ কেউ ঠাঁই নিয়েছে শুকনো জায়গায়, আবার অনেকেই মানবেতরভাবে বাস করছেন ভেঙে পড়া ঘরে।
জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান জানান, পাঁচটি উপজেলায় ৪৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১ হাজার ৮৫০ জন মানুষ ও ১৭১টি গবাদি পশু আশ্রয় নিয়েছে। দুর্গতদের জন্য ৫১টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে, যার মধ্যে ২৯টি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। বন্যার ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কিত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র জানিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে, যা আগের দিনের তুলনায় কম। বৃষ্টিপাত আরও কমতে পারে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের কাজ চলছে। পৌরসভার কর্মীরা নালা-নর্দমা পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করছেন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা মাঠে থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।