বাংলাদেশের নারী ফুটবলে চলমান কোচ ও ফুটবলারের দ্বন্দ্ব নতুন মাত্রা পেয়েছে। ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারের অধীনে খেলতে রাজি নন বেশ কয়েকজন সাফজয়ী ফুটবলার, এমনকি অবসরের হুমকিও দিয়েছেন তারা। অন্যদিকে, তাদের বাদ দিয়েই দল গঠনের ইঙ্গিত দিয়েছেন কোচ বাটলার। এরই মধ্যে জাতীয় দলের তারকা খেলোয়াড় মাতসুসিমা সুমাইয়া অভিযোগ করেছেন, তিনি অনলাইনে ‘হত্যা ও ধর্ষণের’ হুমকি পেয়েছেন।
মঙ্গলবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে সুমাইয়া এই অভিযোগ করেন। তিনি জানান, কীভাবে ছোটবেলা থেকে ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়েছিল, কীভাবে পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও তিনি এই খেলায় ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন এবং সাফল্য অর্জন করেছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনায় তিনি ভীষণ হতাশ এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বোধ করছেন।
সুমাইয়া লিখেছেন, ফুটবলে ক্যারিয়ার গড়তে গিয়ে তিনি শিক্ষা, পরিবার, এমনকি ঈদের আনন্দও বিসর্জন দিয়েছেন, দেশের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে এসে তিনি গভীর অনুশোচনা করছেন, কারণ একজন ক্রীড়াবিদের সংগ্রামের প্রকৃত মূল্যায়ন হচ্ছে না। তিনি আরও জানান, কোচ বাটলারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার পর থেকেই তিনি ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়েছেন। সামাজিক মাধ্যমে তাকে বারবার হত্যা ও ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, যা তাকে মানসিকভাবে ভেঙে ফেলছে।
এদিকে, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) বিষয়টি তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে। কোচের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা ১৮ জন ফুটবলারের মধ্যে ৭ জন ইতোমধ্যে জবানবন্দি দিয়েছেন। এর আগে, বাফুফে সভাপতির কাছে দেওয়া অভিযোগের সঙ্গে ইংরেজিতে লিখিত একটি চিঠিও পাঠিয়েছিলেন সুমাইয়া, যেখানে তিনি খেলোয়াড়দের প্রতি অসদাচরণের বিষয়টি তুলে ধরেন।
সুমাইয়া তার পোস্টে জানান, এই ঘটনার ট্রমা কাটিয়ে উঠতে তার কতদিন লাগবে, তা তিনি জানেন না। তবে একজন খেলোয়াড়ের স্বপ্ন অনুসরণ করতে গিয়ে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়া উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বাংলাদেশের নারী ফুটবলের বর্তমান সংকট নিয়ে এখন ক্রীড়াঙ্গনে তীব্র আলোচনা চলছে, তবে সমাধান কোন পথে যাবে, সেটাই দেখার বিষয়।