পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে বাংলাদেশ ৪৯-২৪ পয়েন্টে নেপালকে পরাজিত করেছে। এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই পাঁচ ম্যাচ সিরিজ নিশ্চিত করল স্বাগতিক দল।
ম্যাচের পর বাংলাদেশ শিবিরে ছিল উৎসবের আমেজ, আর নেপাল শিবিরে হতাশা। হারের পর নেপালের কোচ লাল বাহাদুর বিষ্ট ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘পুরো সিরিজ জুড়ে বাজে আম্পায়ারিং হয়েছে। নেপালে আমন্ত্রণ জানালে আমরা ৫-০ ব্যবধানে জিতব।’
এই ম্যাচেও আম্পায়ারিং ঘিরে বিতর্ক দেখা দেয়। দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশের এক রেইডারের আক্রমণের সময় স্কোরলাইন ছিল ৩৫-১৯। তখন নেপালের খেলোয়াড়রা রেইডারকে আটকানোর চেষ্টা করলেও বাংলাদেশি খেলোয়াড় সেন্টার লাইনে হাত স্পর্শ করেন। হুইসেল বাজলেও নেপাল দাবি করে, সেটি রেইড শেষ হওয়ার পর বাজানো হয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ দাবি তোলে, রেইডের সময়ই হাত সেন্টার লাইনে পৌঁছেছিল। রেফারি বাংলাদেশের পক্ষেই সিদ্ধান্ত দেন, ফলে নেপালের তিন খেলোয়াড় বাদ পড়েন।
এ সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে কিছু সময়ের জন্য কোর্ট ছেড়ে যায় নেপাল দল। প্রায় দশ মিনিট খেলা বন্ধ থাকার পর তারা আবার মাঠে ফেরে, তবে তাদের মনোভাব ছিল স্পষ্ট – এই সিদ্ধান্তের ফলে তারা খেলার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। ম্যাচ শেষে নেপালের কয়েকজন খেলোয়াড় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের বিপক্ষে অনেক ফাউল হলেও আম্পায়াররা সেগুলো আমলে নেয়নি।’
সিরিজের ট্যাকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুল হক আম্পায়ারিং বিতর্ক নিয়ে বলেন, ‘হুইসেল এবং রেইডারের হাত স্পর্শ করার ঘটনা একসঙ্গে ঘটেছিল, তাই সংশয় তৈরি হয়েছে। তবে ভিডিও রেফারেলে দেখা গেছে, ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই রেইডার সেন্টার লাইনে হাত দিয়েছেন।’ বাংলাদেশে আয়োজিত আন্তর্জাতিক কাবাডি প্রতিযোগিতায় গত কয়েক বছর ধরেই আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক রয়েছে, এবারের দ্বিপাক্ষিক সিরিজেও সেই অভিযোগ উঠল।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে দাপুটে জয় পেলেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচে কিছুটা লড়াই করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। তবে চতুর্থ ম্যাচে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলেছে মিজান, দিপায়নরা। ম্যাচের ছয় মিনিটেই প্রথম লোনা আদায় করে নেয় স্বাগতিকরা, এরপর তিন মিনিটের ব্যবধানে দ্বিতীয় লোনায় আরও এগিয়ে যায়।
প্রথমার্ধে ১৩ পয়েন্টের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ (৩১-১৮)। দ্বিতীয়ার্ধেও দারুণভাবে খেলে স্বাগতিকরা। আরও দুটি লোনা আদায় করে নেপালকে অনেকটাই ব্যাকফুটে ঠেলে দেয়, যেখান থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ ছিল না প্রতিপক্ষের।
আগামী শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ম্যাচ, যা এখন শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। এ ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে বাংলাদেশের অধিনায়ক মিজানুর রহমান ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন। তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় আমির হোসেন পাটোয়ারী ও সুবিমল চন্দ্র দাস।