মিয়ানমারের সামরিক শাসক জেনারেল মিন অং হ্লেইং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে একটি হাতি উপহার দিয়েছেন। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
সম্প্রতি মিয়ানমার রাশিয়ার কাছ থেকে ছয়টি যুদ্ধবিমান ক্রয় করেছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, হাতি উপহার দেওয়ার বিষয়টি দুই দেশের মধ্যকার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং কূটনৈতিক বন্ধুত্বের প্রতীক। তারা এটিকে “হাতি কূটনীতি” হিসেবে অভিহিত করছেন।
মঙ্গলবার মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লেইং মস্কো সফরে গিয়ে ক্রেমলিনে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকের পাশাপাশি মিয়ানমারে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন তিনি। রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত পরমাণু বিদ্যুৎ সংস্থা রোসাটম এই কেন্দ্র নির্মাণে অর্থায়ন ও তত্ত্বাবধান করবে। কেন্দ্রটির উৎপাদনক্ষমতা হবে ১০০ মেগাওয়াট, এবং নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর রোসাটম এটি পরিচালনার দায়িত্বেও থাকবে।
রাশিয়া ও মিয়ানমারের মধ্যে ২০০০ সালে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। সেই প্রসঙ্গ টেনে পুতিন বলেন, “চলতি বছর আমরা আমাদের বন্ধুত্বের ভিত্তির ২৫তম বার্ষিকী পালন করব। মিয়ানমার ও রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দিন দিন শক্তিশালী হচ্ছে।”
পুতিন আরও জানান, ২০২৪ সালে দুই দেশের বাণিজ্য ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। জান্তাপ্রধানের দেওয়া উপহারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আপনার এই বন্ধুত্বপূর্ণ উপহারের জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ। হাতিগুলো ইতোমধ্যে মস্কোর চিড়িয়াখানায় স্থানান্তর করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর দুই প্রধান মিত্র হচ্ছে চীন ও রাশিয়া। ২০২১ সালে জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লেইংয়ের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা গ্রহণ করে। তখন রাশিয়া মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে সমর্থন জানিয়েছিল। দেশটির সামরিক বাহিনীর অস্ত্র সরবরাহের অন্যতম প্রধান উৎসও রাশিয়া।
আগামী ৯ মে রাশিয়ার জাতীয় দিবস উপলক্ষে মস্কোতে একটি সামরিক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। সেই কুচকাওয়াজে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন পুতিন, যা জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লেইংয়ের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে।