ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিচার ও সংস্কার ছাড়াই নির্বাচন চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং একই সঙ্গে ফ্যাসিস্ট শক্তিকে পুনর্বাসনের নানা পাঁয়তারা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। বুধবার (২৬ মার্চ) সকালে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহিদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা বারবার বেহাত হয়েছে। প্রতিবার জনগণকে তার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য রক্ত দিতে হয়েছে। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান সেই ধারাবাহিক লড়াইয়েরই অংশ। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে আর কাউকে রক্ত দিতে হবে না—এমন একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে গণতন্ত্র, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করেছি। ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থান সেই লড়াইয়েরই এক নবতর রূপ। আমরা চাই এই সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় একটি গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গড়ে উঠুক।”
নাহিদ ইসলাম মনে করেন, ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থান পরস্পরবিরোধী নয়, বরং একে অপরের পরিপূরক। “৫৪ বছরেও যেটা অর্জিত হয়নি, তা ২৪-এর ছাত্র-জনতার বিজয়ে ফুটে উঠেছে। তবে এই নতুন সময়ের বার্তা সবাই ধারণ করতে পারছে না,” বলেন তিনি।
তিনি অভিযোগ করেন, “সংস্কার ও বিচার ছাড়া কেবলমাত্র একটি দলকে ক্ষমতায় বসানোর উদ্দেশ্যে নির্বাচন চাপিয়ে দেওয়া হলে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। পুরোনো ব্যবস্থাকে আঁকড়ে ধরে চলার চেষ্টাই আজকের সংকটের মূল।”
জাতীয় নাগরিক পার্টির তিন দফা দাবি—বিচার, সংস্কার ও গণ পরিষদ নির্বাচন—উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই পথেই জাতি গণতন্ত্রের দিকে উত্তরণ ঘটাতে পারে। পাশাপাশি তিনি সকল রাজনৈতিক দলকে জাতীয় স্বার্থে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানান।
জাতীয় ঐক্য প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা এখনো সেই ঐক্যের পাটাতনেই আছি, যদিও কিছু দল নিজস্ব এজেন্ডা নিয়ে এগোচ্ছে। কিন্তু যদি সত্যিই আমরা জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে চাই, তাহলে একত্র থেকে সম্মিলিতভাবে পথচলা অব্যাহত রাখতে হবে।”
এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাছির উদ্দিন পাটোয়ারীসহ দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।