শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার হাতিবান্ধা ইউনিয়নের কবিরাজপাড়ায় খালের ওপর নির্মিত সেতুটি ভেঙে পড়ে আছে দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে। এত বছর পেরিয়ে গেলেও সেখানে নতুন সেতু নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি, বরং সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব ফাইলবন্দি অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে আশপাশের অন্তত ১৫টি গ্রামের শত শত মানুষকে প্রতিদিন সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
হাতিবান্ধা ইউনিয়নের ঘাগড়া কবিরাজপাড়া ও পুটলপাড়া সংযোগ সড়ক দিয়ে ওই এলাকার মানুষ নিয়মিত যাতায়াত করেন। মালিঝি নদী থেকে নেমে আসা একটি খালের ওপর ২০০৭ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উদ্যোগে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু নির্মাণের কিছুদিনের মধ্যেই সেতুটি ভেঙে পড়ে। স্থানীয়রা জানান, ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় নির্মাণকাজ শেষ না হতেই সেতুটি খালে ধসে পড়ে যায়।
গ্রামের বাসিন্দা ইয়াদ আলী, নুর মোহাম্মদ, আব্দুল করিম, আসাদুলসহ অনেকে জানান, সেতু ভেঙে পড়ার পর দীর্ঘ সময় পার হলেও সেখানে আর কোনো স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়নি। ফলে যাতায়াতের জন্য কাঠের একটি অস্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হলেও সেটিও এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ এবং এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, এলাকাবাসীর যাতায়াতের সুবিধার জন্য কাঠের সেতুটি বারবার সংস্কার করা হলেও তা দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নয়। ওই স্থানে নতুন একটি সেতু নির্মাণের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে, তবে সেটি দীর্ঘদিন ধরেই অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, সেতুর অভাবে মাঠের ফসল বাজারে আনতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। কৃষিপণ্য ও গবাদি পশু পারাপারেও ঝুঁকি ও বিড়ম্বনা পোহাতে হয়।
হাতিবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “সেতু নির্মাণের জন্য বহুবার লিখিত ও মৌখিকভাবে আবেদন করেছি। প্রতিশ্রুতি তো অনেকই পেয়েছি, কিন্তু আজ পর্যন্ত বাস্তব কোনো কাজ হয়নি।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রকৌশলী শুভ বসাক বলেন, “বিধ্বস্ত সেতুর পাশের কাঠের সেতুটি সংস্কারের জন্য এডিপির অর্থে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি একটি নতুন সেতু নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত নির্মাণ কাজ শুরু হবে।”
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে সেতু না থাকায় শিক্ষার্থী, নারী ও বৃদ্ধদের চলাচল সবচেয়ে বেশি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। তারা দ্রুত নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।