বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, দয়া করে জনগণ ও রাজনৈতিক দলকে অবহেলা করে এমন কোনো চুক্তি করবেন না, যেটি বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়। বৃহস্পতিবার শ্রমিক দিবস উপলক্ষে এক সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সমাবেশের আয়োজন করে শ্রমিক দল। মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিকভাবে একটা অস্বস্তিকর প্রস্তুতির মধ্যে বসবাস করছি। ফ্যাসিবাদের পতন ঘটলেও গণতন্ত্র ফিরে আসেনি। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যে সংস্কার পক্ষে একমত হয়েছে, সেগুলো সংস্কার করুন, সেগুলো সামনে নিয়ে আসুন। নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। যেগুলো হয়নি সেগুলো নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে পার্লামেন্টে আইন পাস হবে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, সংস্কারের তো প্রথম শুরু করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। সংস্কার তো আমাদের দাবি। সংস্কার আমাদের সন্তান। ‘দেশের অস্তিত্ব নির্ভর করছে গণতন্ত্রের ওপর। নির্বাচনই গণতন্ত্র উত্তরণের পথ। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হলেই সব সমস্যা দূর হবে,’ মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপির স্থায়ী কর্মী সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, অনেকে বলেন, ১৭ বছর ধরে আপনারা কী করেছেন? আরে, আমরা ১৭ বছর ধরে গাছের গোড়ায় পানি দিয়ে গাছের গোড়া নরম করেছি, দুই দিনের আন্দোলনে শেখ হাসিনা যায়নি। যারা বলেন, ১৭ বছর কী করেছেন? তারা মিথ্যার সাগরে বসবাস করছেন।
তিনি বলেন, কেউ একা সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশকে বিপদে ফেলছেন কিনা এটা খেয়াল রাখবেন। দেশে দুর্ভোগ ধেয়ে আসছে। আমাদের মধ্যে মতনৈক্য দেশটাকে খেয়ে ফেলবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মতো গোপন চুক্তি করবেন আর এটা বলবেন না, এটা হবে না। মানবিক করিডোর দিতে গিয়ে দেশটাকে বিপদে ফেলবেন না। কারণ আফগানিস্তানকে মানবিক করিডোর দিতে গিয়ে পাকিস্তান এখনো দুর্ভোগে ভুগছে। ‘যেটা বাংলাদেশের প্রয়োজন নেই, সেটির চুক্তির প্রয়োজন নেই, দেশের জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে পাশ কাটিয়ে সেটা করতে চাইলে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে, এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন মির্জা আব্বাস।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ফ্যাসিবাদ চলে গেলেও গণতন্ত্র এখনো আলোর মুখ দেখেনি। তারেক রহমানের ওপর বিশ্বাস রেখে বলছি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হলে বিএনপির বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র তা থামবে। মানুষ তার ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চায়। সরকারে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবে বলে বিশ্বাস করেন তিনি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, সংস্কার কমিশনে বিএনপি যেগুলো সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে, তা নির্বাচনের আগে আইন করে বাস্তবায়ন করতে হবে। এগুলো বাস্তবায়ন হলেই কোনো সমস্যা থাকবে না।