রবিবার
৮ই জুন, ২০২৫
২৫শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

নিম্নচাপে বিপর্যস্ত নোয়াখালীর উপকূল, বিচ্ছিন্ন হাতিয়ার যোগাযোগ

Fresh News রিপোর্ট
মে ২৯, ২০২৫
১২:০৭ অপরাহ্ণ

উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার পর নোয়াখালীর উপকূলজুড়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও মাঝারি মাত্রার দমকা হাওয়া বইছে, ফলে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ।

নিম্নচাপের প্রভাবে বিশেষ করে উপকূলবর্তী হাতিয়া উপজেলার সঙ্গে সারাদেশের নৌযান যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। নিরাপত্তার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে যাত্রীবাহী ট্রলার ও নৌযান চলাচল। এতে করে ওই অঞ্চলের সাধারণ মানুষ ও পর্যটকরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, নদনদীর পানির উচ্চতা কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় জেলা শহরসহ একাধিক নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। যদিও এখনই বন্যার আশঙ্কা করছে না প্রশাসন, তবুও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

নোয়াখালী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে সাগর উত্তাল। উপকূলীয় এলাকায় ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে এবং আগামী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার উন্নতির সম্ভাবনা নেই। এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের বাসিন্দা আইয়ুব আলী জানান, টানা বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। জোয়ারের পানি আরও বাড়লে নিঝুমদ্বীপ তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তিনি। ইতিমধ্যে মাছের ঘের ও পুকুর তলিয়ে গেছে।

জেলা শহরের বাসিন্দা সোহরাব উদ্দিন কাজল বলেন, সকাল থেকে বিদ্যুৎ নেই, বাজারে লোকজনের উপস্থিতি কম, আর শহরের সড়কগুলো পানিতে ডুবে গেছে। পানি আরও বাড়ছে, যা সবাইকে চিন্তিত করে তুলেছে।

অন্যদিকে কোম্পানীগঞ্জের বাসিন্দা আব্দুল হামিদ বলেন, মুছাপুর ক্লোজার ভেঙে যাওয়ায় বহু ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। তিনি মনে করেন, নোয়াখালী যেন মানচিত্র থেকে হারিয়ে না যায়, সে জন্য দ্রুত সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন।

জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, উপকূলজুড়ে মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। আগামী দুই দিন বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। বন্যার সম্ভাবনা মাথায় রেখে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং জরুরি খাদ্য সহায়তার ব্যবস্থাও রয়েছে।