উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে ঈদকে কেন্দ্র করে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়ে গেছে। এর মধ্যেই যাত্রীদের জন্য নতুন আতঙ্ক হয়ে উঠেছে মহাসড়কে চলাচলকারী থ্রি হুইলার। এ যানবাহনগুলো যেমন যানজট ও দুর্ঘটনার কারণ হচ্ছে, তেমনি বাড়িয়ে দিচ্ছে যাত্রীদের দুর্ভোগ।
সোমবার দিনভর সরেজমিনে ঢাকা-রাজশাহী ও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন রুটে যাত্রীবাহী বাসগুলোর চলাচলে থ্রি হুইলারের বিশৃঙ্খল উপস্থিতি দেখা যায়। হঠাৎ থেমে যাওয়া, উল্টোপথে প্রবেশ কিংবা বেপরোয়া গতির কারণে বারবার তৈরি হচ্ছে যানজট এবং দুর্ঘটনার পরিস্থিতি। যদিও মহাসড়কে এ ধরনের যান চলাচল আইনত নিষিদ্ধ, তবে বাস্তবে কোনো কার্যকর নিয়ন্ত্রণ নেই।
বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়ক, হাটিকুমরুল-বনপাড়া, সিরাজগঞ্জ-বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ-পাবনা মহাসড়কে থ্রি হুইলারের দাপট সবচেয়ে বেশি। এতে করে ঘরমুখো যাত্রীদের ভোগান্তির পাশাপাশি চালকদের মাঝেও দেখা দিয়েছে অসন্তোষ ও নিরাপত্তাহীনতা।
বাস, ট্রাক ও মিনিবাস চালকরা বলছেন, নির্ধারিত ভাড়া এবং রুট পারমিট নিয়েও তারা যাত্রী হারাচ্ছেন থ্রি হুইলারের কাছে। একদিকে যাত্রী কমছে, অন্যদিকে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে।
অন্যদিকে যাত্রীদের অনেকেই সময় বাঁচাতে নিরাপদ গণপরিবহন ছেড়ে থ্রি হুইলারে যাতায়াত করছেন। কেউ কেউ বলছেন, সরাসরি গন্তব্যে পৌঁছানো এবং ভাড়ার সমতা তাদের এই পথ বেছে নিতে বাধ্য করছে, যদিও ঝুঁকি রয়েছে তা মেনেই নিচ্ছেন।
থ্রি হুইলার চালকদের মতে, জীবিকার তাগিদেই তারা মহাসড়কে উঠতে বাধ্য হচ্ছেন। কেউ কেউ দাবি করেছেন, তারা পাশের লেনে চলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়ানোর চেষ্টা করেন, যদিও কিছু চালকের অনিয়মের জন্য সবাইকে দোষ দেওয়া ঠিক নয়।
চালক এবং যাত্রীরা একযোগে দাবি জানিয়েছেন সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে কঠোর নজরদারি ও ব্যবস্থা নেওয়ার।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানা পুলিশের ওসি জানিয়েছেন, থ্রি হুইলার নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে এবং মে মাসজুড়ে ৭৩টি থ্রি হুইলারকে জরিমানা করা হয়েছে। এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।