শুক্রবার
৬ই জুন, ২০২৫
২৩শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

যানজটের ভোগান্তি সত্ত্বেও স্বজনদের টানে ছুটছে ঈদযাত্রা

Fresh News রিপোর্ট
জুন ৫, ২০২৫
৮:০৭ পূর্বাহ্ণ

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি অফিসে বুধবার (৪ জুন) ছিল শেষ কর্মদিবস। ছুটির শুরুতে রাজধানীজুড়ে নাড়ির টানে ছুটে চলেছে ঘরমুখো মানুষের ঢল। রেলপথ, সড়কপথ আর নৌপথ – সব মাধ্যমেই বাড়ি ফেরা মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। তবে এই আনন্দযাত্রায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে যানজট।

ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে দেখা গেছে, টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েও খালি হাতে ফিরছেন অনেকে। আসনসহ টিকিট তো নেই-ই, এমনকি স্ট্যান্ডিং টিকিটও মিলছে না। অনেক যাত্রী ট্রেনে ওঠার পর জরিমানা দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করছেন। রেলওয়ে ঈদ উপলক্ষে ১০টি বিশেষ ট্রেন চালু করেছে, যা কিছুটা হলেও ভোগান্তি কমাচ্ছে। স্পেশাল ট্রেনে ভ্রমণের সুযোগ পেয়ে যাত্রীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

অন্যদিকে, রাজধানীর গাবতলী, কল্যাণপুর, মাজার রোড, টেকনিক্যালসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়কপথে দেখা গেছে তীব্র যানজট। দক্ষিণাঞ্চলগামী যাত্রীদের পোস্তাগোলা ও বাবুবাজার ব্রিজ পার হতে লেগে যাচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। হেমায়েতপুর থেকে শ্যামলী পর্যন্ত সড়কে গাড়ির ধীরগতি ও ট্রাফিক জটের কারণে বাসগুলো নির্ধারিত সময়ের অনেক পর ছাড়ছে।

যানজটের অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা গেছে অটোরিকশার স্বাভাবিক চলাচল, ইউটার্ন নিয়ন্ত্রণ, যাত্রীদের যত্রতত্র পারাপার এবং কোরবানির পশু নিয়ে মানুষের ভিড়। ট্রাফিক পুলিশ এসব নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পয়েন্টে ইউটার্ন বন্ধ রেখেছে এবং বাসগুলোকে বিকল্প পথে ঘুরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা নিয়েছে।

এদিকে নৌপথে সদরঘাট থেকেও দক্ষিণাঞ্চলগামী যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। সন্ধ্যা নামতেই লঞ্চ টার্মিনাল যাত্রীতে ভরে ওঠে। যাত্রীদের অনেকে জানান, পদ্মা সেতুর পর লঞ্চে ভিড় কমলেও এখনো লঞ্চ যাত্রা আরামদায়ক বলে তারা এটি বেছে নিচ্ছেন।

সদরঘাটের নিরাপত্তায় পুলিশ প্রশাসনও তৎপর রয়েছে। কোতোয়ালি-সূত্রাপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সব সদস্য সতর্কভাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সদরঘাট টার্মিনাল থেকে জানা গেছে, রাত ৮টা পর্যন্ত ৬৯টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে এবং রাত ১২টার মধ্যে মোট ৯০টি লঞ্চ বিভিন্ন রুটে ছাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সবমিলিয়ে ভোগান্তি থাকলেও পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে মানুষের এই যাত্রায় অনুপ্রেরণা, ত্যাগ ও ভালোবাসার ছাপ স্পষ্ট।