রবিবার
৮ই জুন, ২০২৫
২৫শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

গাজার ঈদের পরদিন ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৭৫

Fresh News রিপোর্ট
জুন ৮, ২০২৫
৯:৪৮ পূর্বাহ্ণ

মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অঞ্চলের মতো ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকাতেও ৬ জুন পালিত হয়েছে ঈদুল আজহা। কিন্তু উৎসবের পরদিনই ৭ জুন ইসরায়েলি বিমান হামলায় রক্তাক্ত হলো গাজা। গাজা সিভিল ডিফেন্সের তথ্যমতে, শনিবারের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭৫ জন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ১০০ জন।

নিহতদের মধ্যে ১৬ জন একই পরিবারের সদস্য, যাঁদের মধ্যে ৬ জন শিশু। ওই পরিবারটি গাজা সিটির সাবরা এলাকায় বসবাস করত। গাজার সিভিল ডিফেন্স বিভাগ জানিয়েছে, এই হামলার আগে কোনো ধরনের সতর্ক সংকেত বা সাইরেন দেওয়া হয়নি। একই ঘটনায় অন্তত ৮৫ জন ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, যাদের এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অন্য বছর ঈদের সকালে নতুন পোশাকে উৎসব পালন করলেও এবার তারা কাটিয়েছেন ধ্বংসস্তূপ আর স্বজন হারানোর শোকে। কেউ কেউ ঈদের দিন ভোরে হামলার শব্দে ঘুম থেকে জেগে উঠে নিজেদের ঘর ধসে পড়তে দেখেছেন।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, তাদের হামলার লক্ষ্য ছিল হামাসের সামরিক শাখা আল কাসেম ব্রিগেডের মুজাহিদিন ইউনিটের প্রধান আসাদ আবু শারিয়া, যিনি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যদিও বাস্তবে নিহতদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক।

ঈদের দিনও ইসরায়েল গাজার বিভিন্ন এলাকায় গোলাবর্ষণ চালায়, যাতে প্রাণ হারান আরও অন্তত ৪২ জন। গত ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার পর থেকেই গাজায় লাগাতার সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ওই হামলায় ১,২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়।

গত ১৭ মাসের ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৫৪ হাজার ৬৭৭ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ২৫ হাজার ৫৩০ জন। নিহত ও আহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা প্রায় ৫৬ শতাংশ।

সামরিক অভিযান ছাড়াও মার্চ থেকে গাজায় খাদ্য, পানি ও ওষুধবাহী গাড়ি প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। ফলে মানবিক বিপর্যয় আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

গণহত্যার অভিযোগে ইতোমধ্যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, হামাসকে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল এবং জিম্মিদের মুক্ত না করা পর্যন্ত অভিযান চলবে।

এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র দুই মাসের যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব দিয়েছে, যাতে ইসরায়েল সম্মতি জানালেও হামাস এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মত হয়নি।