মঙ্গলবার
৫ই আগস্ট, ২০২৫
২১শে শ্রাবণ, ১৪৩২

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

সুজানগরে বিএনপির সংঘর্ষে মামলা গ্রেপ্তার ও অস্ত্রসহ তদন্ত শুরু

Fresh News রিপোর্ট
জুলাই ১৩, ২০২৫
৯:৪২ পূর্বাহ্ণ

পাবনার সুজানগর উপজেলায় বিএনপির দুইগ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিবসহ অন্তত ১৫ জন আহত হওয়ার ঘটনায় ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতোমধ্যে নয়ন খা নামের এক বিএনপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে আহত সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফের ছেলে আদনানুর রউফ রুদ্র বাদী হয়ে সুজানগর থানায় এ মামলা করেন। শনিবার রাতে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন বেড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ।

গ্রেপ্তার নয়ন খা সুজানগর হাসপাতাল পাড়ার বাসিন্দা এবং বিএনপি কর্মী হিসেবে পরিচিত। মামলায় নাম উল্লেখ করা অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সুজানগর পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান খা, উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য কামাল শেখ, বিএনপি কর্মী লেবু খাঁ, পৌর যুবদল সদস্য মানিক খাঁ, এনএ কলেজ শাখার সভাপতি শাকিল খাঁ, পৌর ৬নং ওয়ার্ডের সিনিয়র সহ-সভাপতি রুহুল খাঁ এবং যুবদল কর্মী হালিম শেখসহ আরও অনেকে।

আহত শেখ আব্দুর রউফ কৃষকদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের ঘনিষ্ঠ বলে জানা গেছে। আর মামলার আসামিদের অধিকাংশই বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি একেএম সেলিম রেজা হাবিব ও স্থানীয় নেতা আব্দুল হালিম সাজ্জাদের অনুসারী বলে দাবি করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, মামলায় ২৩ জনের নামের পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা আরও ৫০-৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনায় অস্ত্র ব্যবহারের প্রমাণ সংগ্রহে কাজ করছে পুলিশ। এর অংশ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া অস্ত্রধারী নেতাকর্মীদের ছবিও তদন্তে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

গত ৯ জুলাই দুপুরে সুজানগর পৌর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মজিবর খাঁ ও উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফের সমর্থকদের মধ্যে পুরনো দ্বন্দ্ব থেকে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়। গোলাগুলির মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হন। গুরুতরদের রাজশাহী ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহতদের মধ্যে শেখ আব্দুর রউফ এখনও ঢাকায় চিকিৎসাধীন।

এ ঘটনার পর দলের সিদ্ধান্তে সদস্য সচিব রউফসহ ১০ জন নেতাকর্মীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়। ঘটনার তদন্তে কেন্দ্র থেকে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সুজানগরে এসে তথ্য-উপাত্ত, ভিডিও ও ভাইরাল হওয়া ছবি সংগ্রহ করে থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দেয়।

এছাড়া অভিযুক্ত মজিবর খার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। অবৈধ বালু উত্তোলন, দোকানদারদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ ও স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির মতো ঘটনায় তার নাম উঠে আসে। চলতি বছরের ৩ মার্চ ইউএনওর ওপর হামলার চেষ্টার ঘটনাতেও তার নেতৃত্বে একটি চক্র সরাসরি জড়িত ছিল বলে জানা গেছে।

এর আগে জামায়াত নেতাদের মারধরের ঘটনায় তোলপাড় হলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বাজারের স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির ভিডিও ভাইরাল হলেও পুলিশ তখনো নীরব ভূমিকা পালন করে বলে অভিযোগ রয়েছে।