শুক্রবার
১লা আগস্ট, ২০২৫
১৭ই শ্রাবণ, ১৪৩২

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জেও তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের ৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি

Fresh News রিপোর্ট
জুলাই ১৩, ২০২৫
৯:৪৫ পূর্বাহ্ণ

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে ৮.৮৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। এ খাত থেকে দেশের মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৩৯.৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।

বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনও বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার হিসেবে রয়েছে। এ বাজারে রপ্তানি আয় হয়েছে ১৯.৭১ বিলিয়ন ডলার, যা মোট আরএমজি রপ্তানির ৫০.১০ শতাংশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ৭.৫৪ বিলিয়ন ডলার (১৯.১৮ শতাংশ), যুক্তরাজ্যে ৪.৩৫ বিলিয়ন (১১.০৫ শতাংশ) এবং কানাডায় ১.৩০ বিলিয়ন ডলার (৩.৩১ শতাংশ)।

ইইউতে রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯.১০ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ১৩.৭৯ শতাংশ, কানাডায় ১২.০৭ শতাংশ এবং যুক্তরাজ্যে ৩.৬৮ শতাংশ। ইউরোপের মধ্যে জার্মানিতে সর্বোচ্চ ৪.৯৫ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি হয়েছে, এরপর রয়েছে স্পেন (৩.৪০), ফ্রান্স (২.১৬), নেদারল্যান্ডস (২.০৯), পোল্যান্ড (১.৭০), ইতালি (১.৫৪) ও ডেনমার্ক (১.০৪ বিলিয়ন ডলার)।

কিছু ইউরোপীয় বাজারে প্রবৃদ্ধির হার ছিল উল্লেখযোগ্য। নেদারল্যান্ডসে ২১.২১ শতাংশ, সুইডেনে ১৬.৪১ শতাংশ, পোল্যান্ডে ৯.৭৭ শতাংশ এবং জার্মানিতে ৯.৪৭ শতাংশ রপ্তানি বেড়েছে।

নন-ট্র্যাডিশনাল বাজারে রপ্তানি ৫.৬১ শতাংশ বেড়ে ৬.৪৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা মোট রপ্তানির ১৬.৩৬ শতাংশ। এ বাজারে জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তুরস্কে রপ্তানি বেড়েছে ২৫.৬২ শতাংশ, ভারতে ১৭.৩৯ শতাংশ এবং জাপানে ৯.১৩ শতাংশ। তবে রাশিয়া, কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মালয়েশিয়ায় রপ্তানি কমেছে।

আরএমজি শিল্পে নিটওয়্যার খাতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯.৭৩ শতাংশ এবং ওভেন খাতে ৭.৮২ শতাংশ। শিল্প সংশ্লিষ্টদের মতে, কোভিড-পরবর্তী বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে চাহিদা ও বাস্তবতা দ্রুত বদলে যাচ্ছে, যা নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।

বর্তমানে ট্র্যাডিশনাল বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় মোট রপ্তানির ৮৪ শতাংশ হলেও, নন-ট্র্যাডিশনাল বাজারের অংশীদারিত্ব মাত্র ১৬ শতাংশ। ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, বৈশ্বিক পোশাক বাজারের আকার ২০২৪ সালে ছিল ৫০০ বিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে ১৫০ বিলিয়ন ডলার ছিল নন-ট্র্যাডিশনাল বাজার।

বাংলাদেশ নন-ট্র্যাডিশনাল বাজারে মাত্র ৬ শতাংশ অংশীদারিত্ব ধরে রেখেছে, যেখানে আরও বড় পরিসরে প্রবেশের সুযোগ রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৪ সালে জাপানের মোট পোশাক আমদানির ৫.৫০ শতাংশ এবং অস্ট্রেলিয়ার ১১.৫৩ শতাংশ এসেছে বাংলাদেশ থেকে।

বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেছেন, বৈচিত্র্য এবং উদ্ভাবনের মাধ্যমে নতুন বাজারে প্রবেশ এখন একটি অপরিহার্যতা। তাঁর মতে, প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে কেবল দামে নয়, বরং পণ্যের গুণগত মান ও নিজস্ব সুবিধা সৃষ্টি করেই বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অবস্থান ধরে রাখতে হবে।