বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসনে জাতীয় ঐক্য গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেছেন, জুলাই মাসে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা ঐক্য যেন কোনোভাবেই বিনষ্ট না হয়, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
সোমবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে গণফোরামের প্রয়াত সভাপতি মোস্তফা মহসীন মন্টুর স্মরণে আয়োজিত শোকসভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ড. কামাল হোসেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও দেশ তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, যা এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় তিন জোটের প্রণীত রূপরেখাও রাজনৈতিক অনৈক্যের কারণে ব্যর্থ হয়েছে, যার ফলশ্রুতিতে চব্বিশের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে।
ড. কামাল বলেন, বর্তমান ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতা ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে, সেটাই পরিবর্তনের পথ দেখাতে পারে। তরুণ প্রজন্মের এই শক্তিকে দেশ গড়ার কাজে কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা নিয়ে বক্তব্যে তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তাদের দায়িত্ব এখন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করা সম্ভব।
গণফোরামের প্রয়াত সভাপতি মন্টুকে স্মরণ করে ড. কামাল বলেন, তিনি ছিলেন একজন আদর্শবান রাজনীতিক, যিনি আজীবন বৈষম্যহীন ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখতেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, জাসদের শরীফ নুরুল আম্বিয়া, সিপিবির রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের বজলুর রশিদ ফিরোজ, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক ও মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা।