শুক্রবার
১লা আগস্ট, ২০২৫
১৭ই শ্রাবণ, ১৪৩২

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

নীরব কূটনীতিতে এখনও রাজনীতির প্রভাবশালী মুখ খালেদা জিয়া

Fresh News রিপোর্ট
জুলাই ২৮, ২০২৫
৬:০৫ অপরাহ্ণ

তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থতার কারণে রাজনীতির মাঠে সরাসরি সক্রিয় না থাকলেও দলীয় কৌশল ও পরামর্শে তার নীরব উপস্থিতি এখনও বিএনপির সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

১৯৮১ সালে স্বামী রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হত্যার পর বিএনপির নেতৃত্ব গ্রহণ করেন খালেদা জিয়া। এরপর থেকে চার দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি দেশের রাজনীতিতে প্রভাবশালী নেতৃত্ব দিয়ে এসেছেন। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই সরাসরি রাজনীতি থেকে দূরে।

তবুও দলের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ, কৌশল নির্ধারণ এবং পরোক্ষ দিকনির্দেশনার মাধ্যমে তিনি এখনও প্রভাব বিস্তার করছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিয়মিত তার সঙ্গে পরামর্শ করে থাকেন।

২০১৮ সালে একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে যান খালেদা জিয়া। পরে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে তাকে বাসায় থাকার অনুমতি দেয়। এরপর তিনি রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও দলের ভিতরে তার ভূমিকা অব্যাহত ছিল।

গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতির আদেশে খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ হয়। এরপর থেকে তিনি মাঝে মাঝে ভিডিও বার্তায় দলের কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন এবং বিভিন্ন কূটনৈতিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছেন।

চলতি জুলাই মাসে তার একাধিক সামাজিক ও রাজনৈতিক সক্রিয়তার নজির পাওয়া গেছে। তিনি লালনশিল্পী ফরিদা পারভীনের খোঁজ নিয়েছেন, মাইলস্টোন স্কুলে বিমানবাহিনীর দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন, এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবসে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন।

খালেদা জিয়ার বাসভবনে ভুটান, চীন, নেপাল, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা সাক্ষাৎ করেছেন। কূটনৈতিক পর্যায়ে তার সক্রিয়তা এবং উপস্থিতি রাজনৈতিক মহলে আলোচিত হয়ে উঠেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, তার রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও কৌশলগত দিকনির্দেশনা এখনও বিএনপির নেতৃত্বকে সমৃদ্ধ করছে। লন্ডনে তারেক রহমান ও ড. ইউনূসের বৈঠকের পেছনেও খালেদা জিয়ার নীরব ভূমিকা ছিল বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

২০১৪ সালের নির্বাচন বয়কট এবং ২০১৮ ও ২০২৪ সালে অংশ না নেওয়ার পর, ২০২৬ সালের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।

বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, তিনি যদি বর্তমান স্বাস্থ্য অবস্থা বজায় রাখতে পারেন, তবে আগামী নির্বাচনে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট আসন থেকে প্রার্থী হতে পারেন। সেক্ষেত্রে জিয়া পরিবার থেকে একাধিক সদস্য নির্বাচন অংশগ্রহণের সম্ভাবনাও তৈরি হচ্ছে।