পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তরুণদের প্রস্তুত হতে হবে এবং উন্নয়নের মডেল পুনর্বিবেচনা করতে হবে। কারণ বর্তমান অর্থনৈতিক মডেল জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অপ্রতুল এবং এটি আমাদের ভৌগোলিক অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলছে।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক আয়োজিত ‘কপ২৯: এক্সপেকটেশন, রিয়ালিটি অ্যান্ড লেসনস ফর দ্য ফিউচার’ শীর্ষক কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, “জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। বাজেট বৃদ্ধি করা এবং তা যথাযথভাবে ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি। তরুণদের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারা ভবিষ্যতের নেতৃত্বে থাকবে। উন্নয়ন মডেলকে পরিবেশবান্ধব করতে হলে লাইফস্টাইলে পরিবর্তন আনতে হবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অর্থায়ন (ক্লাইমেট ফাইন্যান্স) কার্যকরভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে না। বায়ু দূষণের ২৮ শতাংশ পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে আসছে, যা এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। পরিবেশগত ন্যায্যতা অর্জনে আমাদের কার্যকর নীতিমালা প্রণয়ন এবং কৃষিজমি সংরক্ষণ ও নদী দূষণ রোধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।”
গোলটেবিল আলোচনায় রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, “পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে অভিযোজন ক্ষমতা কমছে। রাজনৈতিক অবস্থান সঠিক না হলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমস্যার সমাধান পাওয়া কঠিন। তরুণদের সঠিক বার্তা দেওয়ার সক্ষমতা অর্জনে প্রণোদনা দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পলিথিনের বিকল্প প্রযুক্তি উদ্ভাবনের প্রচেষ্টা বাড়ানো উচিত।”
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সুবর্ণ বড়ুয়া। সভাপতিত্ব করেন ইউএপির বিজনেস স্কুলের ডিন অধ্যাপক ড. এম.এ. বাকি খলিলি। আলোচনায় অংশ নেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত, ইউএপি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপার্সন স্থপতি মাহবুবা হক, এবং ইউএপির উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান।
এছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক শওকত আলী মির্জা, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ইআরডি বিভাগের উপসচিব ড. শাহ আবদুল সাদী, পরিবেশ আইনজীবী হাফিজ খান, এবং সিপিআরডি-এর প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহাসহ আরও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ আলোচনায় অংশ নেন।
তরুণ প্রজন্মের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং উন্নয়ন মডেলের পরিবেশবান্ধব পরিবর্তনকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় মূল চাবিকাঠি হিসেবে উল্লেখ করা হয় কর্মসূচিতে।