বিশ্বের সর্বোচ্চ অপরিণত শিশুর জন্ম হয় বাংলাদেশে, যেখানে প্রতি বছর সোয়া ৬ লাখেরও বেশি নবজাতক অপরিণত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে। যা দেশের মোট জনসংখ্যার ১৬.২ শতাংশ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ফিটোম্যাটার্নাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. তাবাসুম পারভীন এই তথ্য তুলে ধরেছেন।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিএসএমএমইউ আয়োজিত ‘প্রিম্যাচুরিটি: অ্যাকসেস টু কোয়ালিটি কেয়ার এভরিহোয়ার’ শীর্ষক সেমিনারে এই বিষয়ে আলোচনা করা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, অপরিণত নবজাতকের জন্মের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে কিশোরী বয়সে বিয়ে, অপুষ্টি, গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন জটিলতা, ধূমপান বা তামাক গ্রহণ, এবং মায়ের রক্তশূন্যতা।
ডা. তাবাসুম পারভীন জানান, প্রি-টার্ম জন্মের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রাক-গর্ভাবস্থা থেকে প্রসবপরবর্তী যত্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অপরিণত শিশুরা শ্বাসকষ্টে ভুগলে প্রসবের আগে অন্তঃসত্ত্বা মাকে কর্টিকোস্টেরয়েড দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়া, নবজাতকদের সুরক্ষায় ক্যাঙারু মাদার কেয়ার পদ্ধতি গ্রহণ করলে তিন-চতুর্থাংশ প্রি-টার্ম মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব।
বিএসএমএমইউ নিওনেটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম এ মান্নান জানান, বিশ্বে প্রতিবছর দেড় কোটি অপরিণত শিশু জন্মগ্রহণ করে, যাদের মধ্যে ১০ লাখ শিশু জটিলতায় মারা যায়। বিএসএমএমইউ এনআইসিইউতে ভর্তি নবজাতকের ৬৪ শতাংশ অপরিণত হলেও তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে।
পেডিয়াট্রিক নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. কানিজ ফাতেমা বলেন, অপরিণত শিশুদের স্নায়বিক জটিলতার ঝুঁকি থাকে, যেমন সেরেব্রাল পালসি, অটিজম, অতিচঞ্চলতা, এবং মৃগীরোগ। এসব শিশুদের প্রথম এক বছর সমন্বিত চিকিৎসার আওতায় রাখার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
সেমিনারে বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা অপরিণত শিশুদের জন্য সঠিক যত্ন নিশ্চিত করতে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।