শনিবার
১৯শে এপ্রিল, ২০২৫
৬ই বৈশাখ, ১৪৩২

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

ইসলামে খাদ্য গ্রহণের সুন্নত: প্রিয় নবীর খাবার ওষুধ হিসেবে

Fresh News রিপোর্ট
ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫
৮:১০ অপরাহ্ণ

ইসলামে খাদ্য গ্রহণকে গুরুত্বপূর্ণ বিধি হিসেবে গণ্য করা হয়েছে এবং নবীজী (সা.) উম্মতকে খাবারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত শিক্ষা দিয়েছেন। সুস্থ থাকার জন্য স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ অপরিহার্য, এবং নবীজী (সা.) যেসব খাবার গ্রহণ করেছেন তা আমাদের জন্য রয়েছে বিশেষ নির্দেশনা। আজ আমরা দেখব সেসব খাবারের উপকারিতা যা নবীজি (সা.) নিজে খেতেন ও সাহাবাদের শিখিয়েছিলেন।

জমজমের পানি: জমজমের পানি পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ পানি হিসেবে অভিহিত হয়েছে। নবীজি (সা.) বলেছেন, “পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ পানি হলো জমজমের পানি। এতে রয়েছে তৃপ্তিদায়ক খাদ্য ও রোগের আরোগ্য।” (আল-মুজামুল আওসাত : ৩৯১২)। এই পানি পান করে যদি কোনো ব্যক্তি আল্লাহর ওপর পূর্ণ বিশ্বাস নিয়ে উপকার লাভের আশায় পান করেন, তবে আল্লাহ তার আশা পূরণ করেন। হজরত জাবের (রা.)-এর বর্ণনায় আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, “জমজমের পানি যে উপকার লাভের আশায় পান করা হবে, তা অর্জিত হবে।” (ইবনে মাজাহ : ৩০৬২)

জাইতুন তেল: রাসুল (সা.) নিজে জাইতুন তেল ব্যবহার করতেন এবং সাহাবাদেরও তা ব্যবহার করার পরামর্শ দিতেন। তিনি বলেন, “তোমরা জাইতুনের তেল খাও এবং তা শরীরে মালিশ করো। কেননা এটি বরকত ও প্রাচুর্যময় গাছের তেল।” (তিরমিজি : ১৮৫১)। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে জাইতুন গাছকে বরকতময় বলে উল্লেখ করেছেন (সুরা ত্বিন : ১)।

মধু: মধু অনেক রোগের আরোগ্য হিসেবে উল্লেখিত। আল্লাহ বলেন, “তার (মৌমাছির) পেট থেকে নির্গত হয় বিবিধ বর্ণের পানীয়, যাতে মানুষের জন্য রয়েছে আরোগ্য।” (সুরা নাহল : ৬৮-৬৯)। রাসুল (সা.) মধু খুব ভালোবাসতেন এবং তা রোগের চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দিতেন। একবার একটি সাহাবি এসে রাসুল (সা.)-কে তার ভাইয়ের পেটের অসুখের কথা বললে, তিনি তাকে মধু খাওয়ার পরামর্শ দেন এবং তার ভাই সুস্থ হয়ে ওঠেন। (বুখারি : ৫৩৬০)

আজওয়া খেজুর: আজওয়া খেজুরকে জান্নাতের ফল হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালবেলা সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে, সেদিন কোনো বিষ ও জাদু তার ক্ষতি করবে না।” (বুখারি : ৫৪৪৫)। রাসুল (সা.) এক সাহাবিকে হৃদরোগের জন্য আজওয়া খেজুরের ব্যবহার পরামর্শ দিয়েছিলেন। (আবু দাউদ : ৩৮৩৫)

কালোজিরা: কালোজিরার রয়েছে অসীম উপকারিতা। রাসুল (সা.) বলেছেন, “কালোজিরায় সব ধরনের রোগের উপশম আছে, তবে আসসাম (অর্থাৎ মৃত্যু) ব্যতীত।” (মুসলিম : ৫৬৫৯)

এই খাবারগুলো আমাদের জন্য শুধুমাত্র সুস্থতা এবং আরোগ্যের উপকরণ নয়, বরং ইসলামের শিখানো জীবনধারা অনুসরণের মাধ্যম।