ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার যেকোনো চুক্তি মেনে নেবে না বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এমনকি ইউক্রেন নিয়ে দুই পরাশক্তির মধ্যে গোপন সমঝোতা হলেও তা প্রত্যাখ্যান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে তুরস্কের বার্তাসংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, জেলেনস্কি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে কেবল কিয়েভই সিদ্ধান্ত নিতে পারে, বাইরের কোনো শক্তি নয়। তার মতে, ইউক্রেনের প্রতিনিধিত্ব ছাড়া কোনো বিশ্বনেতা দেশটির ভাগ্য নির্ধারণের অধিকার রাখে না।
এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে ইউক্রেনকে নিয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত আমি কখনোই মেনে নেব না। আমাদের জনগণের জন্য, আমাদের শিশুদের জন্য, এমন কিছু কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না। কারণ এই যুদ্ধ আমাদের বিরুদ্ধে চলছে, আর এতে আমাদের নাগরিকদের প্রাণ যাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিদলীয় ঐক্য ও সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞ। তবে বিশ্বের কোনো নেতা আমাদের অনুপস্থিতিতে ইউক্রেন ইস্যুতে পুতিনের সঙ্গে চুক্তি করতে পারেন না।”
জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রকে ইউক্রেনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত মিত্র হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আমাদের পরিকল্পনা শেয়ার করতে প্রস্তুত। তবে আলোচনার টেবিলে শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া নয়, ইউক্রেন এবং ইউরোপকেও থাকতে হবে।”
ন্যাটো থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য প্রত্যাহার নিয়ে তিনি বলেন, “যদি যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটো থেকে সরে আসে, তবে রাশিয়ার ইউরোপ দখলের ঝুঁকি ১০০ শতাংশ বেড়ে যাবে। তারা প্রথমে ছোট দেশগুলোকে টার্গেট করবে, বিশেষ করে যেগুলো একসময় সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। এরপর পুরো ইউরোপ আক্রান্ত হতে পারে।”
জেলেনস্কি সতর্ক করে বলেন, “ইউরোপ রাশিয়ার আগ্রাসনের যথাযথ জবাব দিতে পারবে না, কারণ তাদের সে সক্ষমতা নেই। প্রতিটি দেশ তখন নিজেদের রক্ষায় ব্যস্ত হয়ে পড়বে। এ অবস্থায় রাশিয়া আরও বড় সফলতা অর্জন করতে পারে, তারা ইউরোপের ৩০ শতাংশ বা ৫০ শতাংশ দখল করতে চাইবে। তবে কেউই নিশ্চিতভাবে জানে না, তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য কী।”