রবিবার
২০শে এপ্রিল, ২০২৫
৭ই বৈশাখ, ১৪৩২

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

ট্রাম্প-জেলেনস্কির বাগবিতণ্ডা: ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ এবং ন্যাটোর সংকট

Fresh News রিপোর্ট
মার্চ ২, ২০২৫
২:১১ অপরাহ্ণ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে ঘটে যাওয়া বাগবিতণ্ডা বিশ্বব্যাপী নানা আলোচনা সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনার পর, ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, তবে তা বাতিল হয়ে যায়।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ক্ষেত্রে বড় ধরনের সংকটের ইঙ্গিত দেয়। বিশেষ করে ট্রাম্পের রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ইউক্রেনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে। যদিও ট্রাম্প পরবর্তীতে এক টুইট বার্তায় বলেছেন, “যখন জেলেনস্কি শান্তির জন্য প্রস্তুত হবেন, তখন তিনি ফিরে আসতে পারেন।”

ইউক্রেনের নিরাপত্তা ও ন্যাটোর ভবিষ্যত
জেলেনস্কি এবং ট্রাম্পের মধ্যে তীব্র তর্ক-বিতর্কের পর, এখন প্রশ্ন উঠেছে, ইউক্রেনের ভবিষ্যত কী হতে চলেছে। ইউক্রেনের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ভ্লাদিমির ফেসেঙ্ক বলেছেন, “মার্কিন প্রশাসন হয়তো ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা কমিয়ে দিতে পারে।” যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেনের সম্পর্কের এই ভাঙন ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সন্দেহ এবং প্রশ্ন সৃষ্টি করবে।

ন্যাটো এবং মার্কিন প্রতিশ্রুতি
ন্যাটো ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি সামরিক জোট। সেই সময় প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, যাতে বলা হয়েছিল যে, ন্যাটোর কোনো সদস্য রাষ্ট্রের ওপর হামলা হলে তা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর হামলা হিসেবে গণ্য হবে। কিন্তু ট্রাম্পের নেতৃত্বে এই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন উঠতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্ষোভ
এদিকে, ইউক্রেনের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম ‘দ্য কিয়েভ ইন্ডিপেনডেন্ট’ জানিয়েছে, এই ঘটনার পর ইউক্রেনের সাধারণ জনগণ ও বিশ্লেষকরা হতাশ। একদিকে যেখানে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলছে, সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই সম্পর্কের অবনতি ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

এছাড়া, ট্রাম্পের এক্স (সাবেক টুইটার) পোস্টে বলা হয়েছে, “আমরা রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করতে চাই। এটি ইউক্রেনের জন্য বড় সংকট।”

অস্ত্র সহায়তা বন্ধের আশঙ্কা
এদিকে, ট্রাম্প ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা বন্ধ করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০২২ সালে রাশিয়ার হামলার পর ইউক্রেনকে বড় ধরনের সহায়তা পাঠানোর বিষয়ে ট্রাম্প সরব ছিলেন, কিন্তু তিনি এই সহায়তা বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, যা এখন বাস্তবায়িত হতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে, ইউক্রেনের জন্য প্রশ্ন ওঠে, তারা কতদিন রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারবে, যদি যুক্তরাষ্ট্র তাদের সহায়তা বন্ধ করে দেয়?