সোমবার
২১শে এপ্রিল, ২০২৫
৮ই বৈশাখ, ১৪৩২

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

স্ত্রীর আহাজারি ও লাশ ফেরত চাওয়ার আবেদন প্রবাসীর বাড়িতে

Fresh News রিপোর্ট
এপ্রিল ১০, ২০২৫
১০:০৬ পূর্বাহ্ণ

“কি দিন আল্লাহ আমারে দিয়া গেলো রে? তিন অবুঝ শিশুরে আমি ক্যামনে বাঁচায় রাখবো?”—স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে বিলাপ করছিলেন শারমিন আক্তার, যিনি সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হাবিবুর রহমানের স্ত্রী। কান্নায় ভেঙে পড়া এই নারী অনুরোধ করেছেন যেন তার স্বামীর মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।

৪২ বছর বয়সী হাবিবুর রহমান মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে একটি চলন্ত মাইক্রোবাসের চাপায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তিনি দীর্ঘ ১৪-১৫ বছর ধরে সৌদি আরবে কর্মরত ছিলেন এবং দুর্ঘটনার সময় তিনি একটি সড়ক বিভাজনের কাজ করছিলেন।

মর্মান্তিক এই মৃত্যুর খবরে কান্নায় ভেঙে পড়ে তার পুরো পরিবার। স্ত্রী শারমিন আক্তার বলেন, “সে বলছিল ঈদুল আজহার আগে দেশে আসবে, সবাই একসাথে ঈদ করবো। কিন্তু আজ আমাকে একা রেখে গেলো। আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দেন, দেশে পাঠান।”

এই দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে। বড় মেয়ে লিমা (১৭) স্থানীয় মাদ্রাসায় পড়ে, ছেলে সামিউল (১১) প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে, আর ছোট মেয়ে আয়শা (৫) এখনও স্কুলে ভর্তি হয়নি। বাবার মৃত্যুর খবরে লিমা ও সামিউল কাঁদছে বারবার, তবে আয়শা কিছুটা নির্বাক, যেন কিছুই বোঝেনি।

ঘটনার বিষয়ে হাবিবুর রহমানের শ্যালক আলাউদ্দিন শেখ জানান, “দুলাভাইয়ের রুমমেটের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি কীভাবে দুর্ঘটনা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি যেন তার মরদেহ দেশে আনা যায়।”

ঘারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল মান্নান বলেন, “জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে হাবিবুর রহমান বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন। আজ তিনি আর নেই। আমরা গভীরভাবে শোকাহত।”

একটি পরিবারে ভরসার স্তম্ভ হঠাৎ ভেঙে পড়ায় শোক আর আতঙ্কে ডুবে গেছে হাবিবুর রহমানের স্বজনেরা। এখন তাদের একটাই চাওয়া—স্বজনের মরদেহ যেন দ্রুত দেশে ফেরানো হয়, যেন সন্তানরা অন্তত শেষবারের মতো বাবাকে দেখতে পায়।