দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর অবশেষে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে হামাস ও দখলদার ইসরায়েল। মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে চুক্তিটি চূড়ান্ত হয়েছে, যা মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতার সম্ভাবনা উজ্জ্বল করছে।
চুক্তির আওতায় ছয় সপ্তাহের প্রাথমিক যুদ্ধবিরতির রূপরেখা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীর ধীরে ধীরে গাজা থেকে প্রত্যাহার এবং ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি বিনিময়ে হামাসের হাতে আটক ইসরায়েলি ও বিদেশি বন্দীদের মুক্তি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। গোপন আলোচনা শেষে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) চুক্তিটি সম্পন্ন হয় বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এ সংঘাত ভয়াবহ প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে আনে। হামাসের নেতৃত্বে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাঁধা ভেঙে অভিযান চালায়, যেখানে ১,২০০ জন নিহত এবং ২৫০ জনের বেশি মানুষ বন্দী হয়। পাল্টা অভিযানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে ৪৬ হাজারের বেশি প্রাণহানি ঘটে, এবং পুরো উপকূলীয় অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।
যুদ্ধবিরতি চুক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা না হলেও হামাস চুক্তির মৌখিক সম্মতি জানিয়েছে। ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা বিষয়টি নিয়ে দ্রুত ভোটের আয়োজন করবে বলে জানানো হয়েছে। ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিয়ন সা’আর তার সফর সংক্ষিপ্ত করে চুক্তি কার্যকরের তদারকিতে ফিরছেন।
চুক্তি বাস্তবায়ন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রচেষ্টার একটি বড় অর্জন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের আগে দ্রুত চুক্তি সম্পন্নের আহ্বান জানান এবং বন্দীদের মুক্তি নিয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক অভিযানে হামাস ও লেবাননের হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতাদের হত্যার মাধ্যমে দেশটি কৌশলগতভাবে কিছুটা এগিয়ে গেছে। তবে এই চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা প্রশমনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।