রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা মানি লন্ডারিং মামলায় সাদিক অ্যাগ্রো লিমিটেডের চেয়ারম্যান ইমরান হোসেনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম. এ আজহারুল ইসলামের আদালত আসামির জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের উপ-পরিদর্শক মো. ছায়েদুর রহমান আদালতে হাজির হয়ে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে কারাগারে রাখার আবেদন করেন।
আসামিপক্ষে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মাসুদ আহমেদ তালুকদার ও অ্যাডভোকেট আল মামুন রাসেল জামিন চেয়ে শুনানি করেন, তবে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।
এর আগে সোমবার দুপুরে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান ইমরান হোসেনের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। একই দিন সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম অর্গানাইজডের উপ-পরিদর্শক জোনাঈদ হোসেন মোহাম্মদপুর থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ইমরান হোসেন, তৌহিদুল আলম জেনিথ ও সাদিক অ্যাগ্রো লিমিটেড একটি সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের মাধ্যমে চোরাচালান, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে অনুমোদনহীন ব্রাহমা জাতের গরু আমদানি করে এবং সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে প্রায় ৮৬ লাখ টাকা বিদেশে পাচার করে।
এছাড়া, তারা টেকনাফ ও উখিয়া সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে গরু ও মহিষ এনে বিক্রি করতেন। একইভাবে নেপাল ও ভুটান থেকে ছোট আকৃতির ভুট্টি গরু চোরাচালানের মাধ্যমে এনে বেশি দামে বিক্রির অভিযোগও রয়েছে। দেশীয় গরু ও ছাগলকে বিদেশি জাতের বলে প্রচার করে উচ্চমূল্যে বিক্রি করা হতো।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ঢাকার কাস্টমস হাউজ কর্তৃক আটক করা এবং সাভারের কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে থাকা ১৫টি ব্রাহমা জাতের গরু সরকারি নির্দেশনায় ন্যায্যমূল্যে মাংস বিক্রি করার কথা ছিল। কিন্তু আসামিরা জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্রে জবাই দেখিয়ে আসল গরুগুলো আত্মসাৎ করেন।
এছাড়া, ইমরান হোসেন মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় রামচন্দ্রপুর সরকারি খাল অবৈধভাবে ভরাট ও জবরদখল করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়, অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে তিনি নিজের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান জালালাবাদ মেটাল লিমিটেডের নামে ১১ কোটি ৩৬ লাখ ৯১ হাজার ২০০ টাকার এফডিআর খুলেছেন এবং বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগের মাধ্যমে মোট ১৩৩ কোটি ৫৫ লাখ ৬ হাজার ৩৪৪ টাকা হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করেছেন।
এ ঘটনায় তদন্ত চলমান রয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি গভীরভাবে অনুসন্ধান করছে বলে জানিয়েছে সিআইডি।