আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত শেষ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঢাকার আশুলিয়ায় ৬ জনকে হত্যার পর লাশ পোড়ানোর ঘটনায় দায়ের হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
রোববার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি। তাজুল বলেন, ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় সংঘটিত মর্মান্তিক ওই ঘটনায় তদন্ত শেষ হয়েছে এবং এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের হওয়া প্রথম মামলার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার নজির তৈরি করলো।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৫ আগস্ট সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত আশুলিয়ায় গুলিতে প্রাণ হারান অন্তত ৩১ জন। আন্দোলনের পরদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়। মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় অন্তত ৭৫ জনে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন আরও দেড় হাজারের বেশি মানুষ, যাদের অনেকে স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে যান।
সেসময় সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও, যেখানে দেখা যায়, পুলিশ সদস্যরা নিহতদের লাশ একটি ভ্যানে তুলে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। ভিডিওর মাধ্যমে শনাক্ত করা যায় ঘটনাস্থল ছিল আশুলিয়া থানার পাশে। ভিডিওর একটি মুহূর্তে স্থানীয় ইউপি নির্বাচনের পোস্টার দেখে নিশ্চিত হওয়া যায় ঘটনাটি ঘটেছে ধামসোনা ইউনিয়নের আওতায়।
লাশ পোড়ানোর ওই ভয়াবহ ঘটনার জেরে গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দুটি অভিযোগ দায়ের হয়, যা পরবর্তীতে একত্র করে একটি মামলায় রূপান্তর করা হয়।
এই মামলায় গত ২৪ ডিসেম্বর স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তিনি এখনও পলাতক রয়েছেন। তবে মামলার অন্যান্য অভিযুক্তদের মধ্যে ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, সাভার সার্কেলের তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহিদুল ইসলাম, আশুলিয়া থানার ওসি এ এফ এম সায়েদ, ডিবি পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক ও কনস্টেবল মুকুলকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তদন্ত শেষ হওয়ায় এখন মামলাটির বিচার প্রক্রিয়া শিগগিরই শুরু হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।