এখন সময় এলাকার মানুষের সমস্যা খুঁজে বের করে সমাধানের রূপরেখা তৈরি করার—এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব ফয়সাল মাহমুদ শান্ত। বরগুনায় আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, প্রার্থী নির্ধারণের আগে স্থানীয় সমস্যাগুলো জানা ও বুঝে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
শনিবার (৫ এপ্রিল) বরগুনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এনসিপি আয়োজিত ‘মিট দ্যা প্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমাদের হাতে সময় কম। তাই দলের নিবন্ধন পেতে প্রয়োজনীয় সব কাজ দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করছি। এখন পর্যন্ত প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রে দৃশ্যমান কোনো প্রচার শুরু না করলেও অনেকে নিজ উদ্যোগে এলাকায় গণসংযোগ করছেন।”
তিনি আরও জানান, এনসিপির রাজনীতির মূলভিত্তি জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের দাবির ওপর। “তবে অন্য রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের নির্বাচনী আলোচনায় জড়াচ্ছে, বাধ্য করছে পোস্টারিং ও লিফলেট বিতরণে। এর মধ্যেই দল কাজ করছে নীতিগত অবস্থান ধরে রেখে।”
ভবিষ্যৎ নির্বাচনী পরিকল্পনা প্রসঙ্গে ফয়সাল মাহমুদ শান্ত বলেন, “আমাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে মাঠের পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনায় ভবিষ্যতে জোট বা সমঝোতা হতে পারে, যদিও এ বিষয়ে এখনই আমরা কিছু ভাবছি না।”
তিনি দাবি করেন, এনসিপিকে ‘কিংস পার্টি’ বলা হলেও বাস্তবে পরিস্থিতি ভিন্ন। “আমাদের নেতাকর্মীরা এলাকায় গেলে বিএনপি নেতাদের হাতে হামলার শিকার হন। অথচ বিগত ১৫ বছরে প্রশাসনে পদোন্নতি পাওয়া অনেকেই বিএনপি-জামায়াত ঘরানার। ডিসি, এসপি, ইউএনওর দপ্তর পরিচালনায় যারা যুক্ত, তাদের দিকে তাকালেই বোঝা যাবে ‘কিংস পার্টি’ আসলে কারা।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে একটি গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এ সত্য অনেক রাজনৈতিক দল মুখে স্বীকার না করলেও বাস্তবতা বদলেছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জনমানুষের আকাঙ্ক্ষা থেকেই গঠিত হয়েছে।”
ফয়সাল মাহমুদ দাবি করেন, “বর্তমান চিফ অ্যাটর্নি জেনারেল একসময় বিএনপির মানবাধিকার সম্পাদক ছিলেন। তাদের নিয়েই যদি প্রশ্ন আসে, তবে বিএনপি নিজের ঘরের উপদেষ্টাদের নিয়েও প্রশ্ন তুলুক। ২০০৬ সালে তারা যেভাবে সংবিধান পরিবর্তন করে বিচারপতির বয়স বাড়িয়েছিল, সেটাও সবাই জানে।”
সরকারের পারফরম্যান্স প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গত সাত মাসে সরকার নানা ব্যর্থতা দেখিয়েছে। তবে অনেক ইতিবাচক আন্তর্জাতিক পদক্ষেপও নিয়েছে। এসব উদ্যোগ জনবান্ধব কি না, তা জনগণই ঠিক করবে। যদি জনগণ বর্তমান কাঠামো না চায়, তাহলে গণভোট হোক—তারা কাকে চায়, সেটা স্পষ্ট হোক।”