শনিবার
১৯শে এপ্রিল, ২০২৫
৬ই বৈশাখ, ১৪৩২

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

গাজা অভিযান বন্ধে চিঠি, পাইলট-সেনাকে বহিষ্কারের হুমকি ইসরায়েলের

Fresh News রিপোর্ট
এপ্রিল ১০, ২০২৫
১০:০৩ পূর্বাহ্ণ

গাজায় সামরিক অভিযানে অংশ নিতে আপত্তি জানানোয় ইসরায়েলের বিমানবাহিনীর ৯৭০ জন পাইলট, কর্মকর্তা ও সেনা সদস্যকে বাহিনী থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেওয়া হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছেন নিয়মিত সদস্য ছাড়াও রিজার্ভ পাইলট ও সেনারা।

বুধবার ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ এক প্রতিবেদনে জানায়, গাজায় চলমান সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বিমানবাহিনীর শীর্ষ কমান্ডারদের কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে, যাতে ৯৭০ জন সদস্য স্বাক্ষর করেছেন। যদিও চিঠিতে কেউই সরাসরি পদত্যাগের হুমকি দেননি, তবু এ অবস্থানকে ‘দায়িত্ব পালনে সন্দেহজনক’ বলে মনে করছে সেনা কর্তৃপক্ষ।

হারেৎজ জানায়, চিঠির পরপরই বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কমান্ডাররা স্বাক্ষরকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন এবং জানান, কেবল তারাই বাহিনীতে থাকতে পারবেন যারা এই তালিকা থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করবেন। কিন্তু মাত্র ২৫ জন সদস্য এমন সিদ্ধান্তে রাজি হয়েছেন।

চিঠিতে স্বাক্ষরকারীরা দাবি করেন, গাজায় সামরিক অভিযান রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং এর সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার কোনো বাস্তব সম্পর্ক নেই। এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত ইসরায়েলের বিরোধী দলগুলোও। তারা বরাবরই বলে আসছে, গাজায় এই হামলার মূল উদ্দেশ্য প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ক্ষমতা ধরে রাখা।

এ পরিস্থিতিতে বিমানবাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল তোমের বার স্বাক্ষরকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেখানে তিনি বলেন, বাহিনী সন্দিহান—এরা অভিযানে সঠিক দায়িত্ব পালন করবেন কি না। ফলে জিম্মি উদ্ধারের মতো গুরুত্বপূর্ণ মিশন ব্যাহত হতে পারে। তাই এই পদক্ষেপ শাস্তিমূলক নয়, বরং যৌক্তিক সিদ্ধান্ত।

তিনি আরও জানান, যুদ্ধ চলাকালে এই ধরনের অবস্থান ‘বৈধ নয়’। যদিও আশ্বাস দেন, খুব শিগগিরই গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং জিম্মিদের মুক্ত করতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায়, যাতে ১২০০ মানুষ নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এরপরই ইসরায়েল গাজায় টানা সামরিক অভিযান শুরু করে, যা চলে ১৫ মাস ধরে। পরে ১৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর চাপে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। তবে গত ১৮ মার্চ থেকে ফের অভিযান শুরু করেছে দেশটি, যার ফলে গত ২৩ দিনে আরও ২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। পুরো অভিযানে এখন পর্যন্ত প্রাণ গেছে ৪৯ হাজারের বেশি মানুষের।