পৌষের কনকনে শীত ও ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে রংপুর জেলায় নতুন বছরের প্রথম দিনেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে নতুন বই বিতরণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে এবার বিগত বছরগুলোর মতো বড় আকারে বই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে উৎসবের আনন্দ না থাকলেও নতুন বইয়ের গন্ধে শিক্ষার্থীরা খুশি, যদিও বই সরবরাহের সমস্যা তৈরি হওয়ায় প্রত্যাশা অনুযায়ী সব শিক্ষার্থী নতুন বই পায়নি।
বুধবার (১ জানুয়ারি) সকালে রংপুর নগরীর বিভিন্ন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নতুন বই বিতরণের দৃশ্য দেখা যায়। তবে, বইয়ের পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী পূর্ণ পরিসরে নতুন বই পায়নি। মাধ্যমিকের প্রায় ৬৫ শতাংশ এবং প্রাথমিকের ৪৫ শতাংশ বই পৌঁছালেও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির বই পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
এদিকে, নতুন বই বিতরণের প্রক্রিয়া চললেও, বই সংকটের কারণে অনেক শিক্ষার্থী প্রথমদিনে নতুন বই হাতে না পাওয়ার কারণে কিছুটা হতাশ। গতকাল, রংপুর নগরীর আশরতপুর এলাকায় শহীদ শংকু সমজদার বিদ্যানিকেতনে শিশু শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তিস্তা ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম আল আমিন।
এছাড়া, রংপুর বিভাগের প্রাথমিক শিক্ষা উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রংপুর বিভাগে মোট ৯ হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ৩০ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। তবে, এ অঞ্চলে ১ কোটি ১০ লাখ ৮০ হাজার বই প্রয়োজন হলেও, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪৭ লাখ ৭৮ হাজার বই পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে ৫৬ শতাংশ বই এখনও আসেনি।
প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের বই বিতরণ চালু থাকলেও, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বই পাওয়া যায়নি। এদিকে, বই না পাওয়ার কারণে কিছু শিক্ষার্থী আক্ষেপ প্রকাশ করেছে। রংপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের এক অভিভাবক লতা রাণী বলেন, তার মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে উঠলেও নতুন বই না পাওয়ায় সে অনেকটাই হতাশ।
এছাড়া, রংপুর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এই বিভাগের ৩ হাজারেরও বেশি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ১৪ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে এবং ৩ কোটি ২ লাখ ২৪ হাজার বই প্রয়োজন, কিন্তু এখনও ৩৫ শতাংশ বই এসেছে। তবে, কর্মকর্তারা আশা করছেন জানুয়ারির মধ্যে সব বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছাবে।
এ প্রসঙ্গে রংপুর বিভাগের প্রাথমিক শিক্ষা উপ-পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, “বই আসছে এবং আশা করি জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সব বই পাওয়া যাবে।”