ময়মনসিংহের গৌরীপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ নূরে আলম সিদ্দিকী রাকিবের স্ত্রী সাদিয়া আক্তারের কোলজুড়ে এসেছে নতুন অতিথি। সদ্য জন্ম নেওয়া কন্যার নাম রাখা হয়েছে সাবরিনা বিনতে সিদ্দিকী। তার আগমনে গ্রামজুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা মিষ্টি বিতরণ করে এই আনন্দ ভাগাভাগি করেছেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শিশুটিকে সোনার আংটি উপহার দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ উত্তর জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন পাপ্পুর নেতৃত্বে ছাত্রদল ও যুবদল নেতাকর্মীরা ঈশ্বরগঞ্জের পুনাইল গ্রামে শহীদ রাকিবের শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে নবজাতক ও তার মায়ের খোঁজখবর নেন। সেখানে সাবরিনার হাতে উপহারের আংটি পরিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নতুন কাপড় তুলে দেওয়া হয়।
এর আগে, মঙ্গলবার বিকেলে যুবদল নেতাকর্মীরা ভারতী বাজার ও পুনাইল গ্রামে মিষ্টি বিতরণ করে সাবরিনার জন্মের আনন্দ সবার মাঝে ছড়িয়ে দেন। সদ্যোজাত কন্যার মা সাদিয়া আক্তার গত ১৯ জানুয়ারি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সন্তানের জন্ম দেন। বর্তমানে তিনি তার বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন।
যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন পাপ্পু বলেন, “শহীদ রাকিব আমাদের আন্দোলনের অংশ হিসেবে জীবন দিয়েছেন। তার মেয়ের জন্ম আমাদের কাছে একটি আবেগঘন মুহূর্ত। আমরা মিষ্টি বিতরণের পাশাপাশি তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সোনার আংটি উপহার দিয়ে নবজাতককে বরণ করেছি।”
উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবিদ হাসান রাহাত বলেন, “রাকিব তার মেয়ের মুখ দেখার আগেই আত্মত্যাগ করেছেন। আমরা মিষ্টি বিতরণের মাধ্যমে তার পরিবারের আনন্দ ভাগাভাগি করার চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি সরকারের কাছে তাদের সহায়তার দাবি জানাই।”
শহীদ রাকিবের স্ত্রী সাদিয়া আক্তার বলেন, “পাপ্পু ভাই উপহার নিয়ে এসে মেয়েকে দেখেছেন, যা আমাকে আনন্দ দিয়েছে। তবে স্বামীর অনুপস্থিতিতে মেয়েকে কীভাবে লালন-পালন করব, তা নিয়ে আমি দুশ্চিন্তায় আছি। আমি স্বামীর হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।”
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম সাজ্জাদুল হাসান জানান, “শহীদ রাকিবের পরিবারের জন্য আমরা সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করব। তাদের প্রতি নজর রাখা হবে।”
উল্লেখ্য, গত বছরের ২০ জুলাই গৌরীপুরের কলতাপাড়া বাজারে ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন রাকিব। তার মরদেহ নিজ গ্রাম দামগাওয়ে দাফন করা হয়।