ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পদত্যাগ এবং নিপীড়নের প্রতিবাদে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত লিফলেট বিতরণের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ। দলটির অধিকাংশ নেতাকর্মী পলাতক থাকায় এই কর্মসূচি কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এরই মধ্যে একটি গোয়েন্দা সংস্থা সন্দেহ করছে, হকারদের মাধ্যমে গোপনে লিফলেট বিতরণের পরিকল্পনা করছে আওয়ামী লীগ। এ কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হকারদের সতর্ক করেছে।
৩১ জানুয়ারি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পত্রিকা বিলির দায়িত্বে থাকা হকারদের মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা পত্রিকার সঙ্গে সরকারবিরোধী লিফলেট বিতরণ না করেন। নির্দেশনা অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়। তবে অন্যান্য প্রচারপত্র বিতরণে কোনো বাধা নেই বলে হকারদের জানানো হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, “এমন কোনো নির্দেশনার বিষয়ে আমি কিছু জানি না।”
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান রেজাউল করিম মল্লিকও জানান, “আমাদের পক্ষ থেকে এমন কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে না।” তবে, তিনি বলেন, “কেউ যদি ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে এমন নির্দেশনা দিয়ে থাকে, সেটি দুঃখজনক।”
এদিকে, একটি গোয়েন্দা সংস্থার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা তথ্য পেয়েছেন যে, গ্রেপ্তার এড়াতে এবং জনরোষ থেকে বাঁচতে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হকারদের মাধ্যমে লিফলেট বিতরণের কৌশল নিয়েছে। তাই হকারদের সতর্ক করা হয়েছে, যাতে তারা না বুঝে এই কর্মকাণ্ডে অংশ না নেয়।
খিলগাঁও এলাকার এক হকার জানান, “রাজারবাগ আল-বারাকা হাসপাতালের সামনে কয়েকটি এলাকার হকাররা পত্রিকা সংগ্রহ করেন। সেখানে দুজন ডিবি পুলিশ এসে আমাদের সতর্ক করেছেন যে, পত্রিকার সঙ্গে রাজনৈতিক লিফলেট বিতরণ করলে গ্রেপ্তার ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে।”
বাসাবো এলাকার আরেক হকার জানান, “সকালবেলা পত্রিকা বিতরণের সময় দুইজন ডিবি পুলিশ এসে বলেছেন, আমরা যেন কোনো দলের সরকারবিরোধী লিফলেট বিতরণ না করি। করলে জেলখানায় পাঠিয়ে দেবে।”
এদিকে, আওয়ামী লীগ ফেসবুকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, যার মধ্যে ১-৫ ফেব্রুয়ারি লিফলেট বিতরণ, ৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদ মিছিল, ১০ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভ সমাবেশ, ১৬ ফেব্রুয়ারি অবরোধ এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে হরতালের কর্মসূচি রয়েছে। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দলটির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার বার্তা দিয়েছে।