বরিশালে জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রাঢ়ী ও তার সহযোগীদের হাতে দুই সাংবাদিক মারধরের শিকার হয়েছেন। তাদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে, ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়েছে এবং মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের গেটের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহত দুই সাংবাদিক হলেন নূরুল আমিন রাসেল ও মনিরুল ইসলাম। তারা স্থানীয় দুটি পত্রিকায় কর্মরত। আহত অবস্থায় তাদের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম জানান, “মুলাদী আমলি আদালত থেকে এক আওয়ামী লীগ নেতার জামিনের খবরে আমরা ছবি তুলতে আদালতে যাই। পেশাগত কাজ শেষে আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগ করার সময় গেটের সামনে ছাত্রদলের নেতা ও তার সহযোগীরা আমাদের মোটরসাইকেল থামিয়ে মারধর শুরু করে। ক্যামেরা ভাঙে, মোবাইল ছিনিয়ে নেয় এবং আমাদের চলন্ত মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।”
অপর সাংবাদিক নূরুল আমিন রাসেল বলেন, “হঠাৎ করেই আমাদের ওপর হামলা করা হয়। কোনো কথাবার্তা ছাড়াই তারা আমাদের গায়ে হাত তোলে। এটা কেন করল আমরা জানি না। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছিলাম, ফেরার সময় এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটবে, ভাবিনি।”
এই ঘটনায় সাংবাদিক মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে অন্যান্য সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং প্রতিবাদস্বরূপ সড়ক অবরোধ করেন। প্রশাসনের আশ্বাসে পরে তারা আদালত গেটের সামনে অবস্থান নেন।
দৈনিক ইত্তেফাকের বরিশাল ব্যুরো প্রধান শাহিন হাফিজ বলেন, “সাংবাদিকদের ওপর প্রকাশ্যে হামলা, ক্যামেরা ভাঙচুর ও মোটরসাইকেল পোড়ানো গণতন্ত্রের চরম অপমান। প্রশাসনকে দ্রুত জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে হবে।”
বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আমরা কোনো দল দেখি না। অপরাধী যে-ই হোক, তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। সাংবাদিকরা যেন নিরাপদে কাজ করতে পারে, সেটা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা সোহেল রাঢ়ীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, “দুই সাংবাদিককে মারধরের খবর পেয়েছি। মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাও নিশ্চিত হওয়া গেছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সাংবাদিকরা আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।