মঙ্গলবার
৬ই মে, ২০২৫
২৩শে বৈশাখ, ১৪৩২

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

তাড়াশে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক ও তার স্ত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ

Fresh News রিপোর্ট
এপ্রিল ৬, ২০২৫
৯:৪২ পূর্বাহ্ণ

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ থানায় ঘুষ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পর থানায় ডেকে সাংবাদিককে নির্যাতন ও তার স্ত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নাজমুল কাদেরের বিরুদ্ধে।

শনিবার সকালে সিরাজগঞ্জ শহরের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন দৈনিক ইত্তেফাকের তাড়াশ উপজেলা সংবাদদাতা ও স্থানীয় এনজিও পরিবর্তন সংস্থার পরিচালক গোলাম মোস্তফা এবং তার স্ত্রী ফারজানা পারভিন।

সংবাদ সম্মেলনে গোলাম মোস্তফা বলেন, ঈদের দিন রাতে সাড়ে ১১টার দিকে ব্যক্তিগত প্রাইভেটকারে বাড়ি ফেরার পথে ডাকাত দলের হামলার শিকার হন তিনি। ডাকাতরা চালককে মারধর করে প্রায় ৪৬ হাজার টাকা ও একটি স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়। ঘটনার পর থানায় ফোন করলে পুলিশ পরিদর্শক নাজমুল কাদের তাকে থানায় আসতে বলেন।

তিনি জানান, থানায় গেলে প্রথমেই তার স্ত্রীকে গেটের বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে নাজমুল কাদের মামলা না নিয়ে তাকে মারধরের চেষ্টা করেন এবং প্রকাশিত সংবাদের কারণে হুমকি দেন। এক পর্যায়ে তার স্ত্রীকে গাড়ি থেকে টেনে হেঁচড়ে নামানোর সময় হাঁটুতে আঘাত পান তিনি।

সাংবাদিক মোস্তফা অভিযোগ করেন, নাজমুল কাদের তাকে “মদ খেয়ে থানায় এসেছিস” বলে গালাগাল করেন, শার্টের কলার ও চুল ধরে মারধর করেন এবং জোরপূর্বক থানার পিকআপে তুলে নিয়ে আবারও মারধর করেন। পরবর্তীতে জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক তাকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, পরে আবার থানায় এনে তাকে মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে মুচলেকা লিখিয়ে মুক্তি দেওয়া হয়। এ সময় তার মা থানায় উপস্থিত ছিলেন এবং নাজমুল কাদেরের পক্ষ থেকে আপসের প্রস্তাব দেওয়া হয়।

ফারজানা পারভিন বলেন, তার স্বামীর বিরুদ্ধে ঘুষ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের জেরে পুলিশ তাদের হয়রানি করেছে। তাকে টেনে হেঁচড়ে নামানো হয়েছে, ধাক্কা দেওয়া হয়েছে, যা নারীর সম্মানের ওপর সরাসরি আঘাত। তিনি অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।

এদিকে অভিযুক্ত পরিদর্শক নাজমুল কাদের তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “সাংবাদিক গোলাম মোস্তফা গভীর রাতে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় থানায় এসে পুলিশের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। পরে অনুরোধের ভিত্তিতে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এখন তিনি মিথ্যা অভিযোগ করছেন।”

ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে এবং সাংবাদিক মহলে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। স্থানীয়রা ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।