বুধবার
৭ই মে, ২০২৫
২৪শে বৈশাখ, ১৪৩২

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিতে নিস্ক্রীয়দের অন্তর্ভুক্ত করায় তৃনমুলে ক্ষোভ

Fresh News রিপোর্ট
এপ্রিল ২৬, ২০২৫
৮:২৯ অপরাহ্ণ
Oplus_131072

নিজস্ব প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিতে দীর্ঘদিন দলীয় কর্মকান্ডে নিস্ক্রীয় কয়েক জনকে নতুন করে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করায় তৃনমুল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।

সিরাজগঞ্জ জেলার কতিপয় নেতা তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য এমন কাজ করেছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। এতে করে আগামীতে জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলে মনে করছেন তৃনমুল বিএনপি নেতাকর্মীরা।

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। নতুন অন্তর্ভুক্তকরন সদস্যরা হলো-আনিসুজ্জামান পাপ্পু, আব্দুল কাদের চেয়ারম্যান, সেলিম জাহাঙ্গীর, মিলন ইসলাম খান ও রুহী আফজাল। এদের মধ্যে রুহী আফজাল সরাসরি আওয়ামীলীগের দোসর ছিলেন। এমনকি রুহী আফজাল বিগত নির্বাচনে বোন রিটাকে আফজালকে আওয়ামীলীগের প্রার্থী করেছিলেন। নিজেও আওয়ামীলীগের মনোনয়ন ফরম তুলেছিলন। অন্যান্যদের মধ্যে সেলিম জাহাঙ্গীর, মিলন ইসলাম খানও দীর্ঘদিনও বিএনপির রাজনীতিতে নিস্ক্রীয় ছিল। তৃনমুল নেতাকর্মীরা বিএনপির সম্মেলন সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করা লক্ষ্যে বিতর্কিত ও নিস্ক্রীয়দের বাদ দেয়ার দাবী জানিয়েছেন।

তথ্যানুসন্ধ্যানে জানা যায়, বিভিন্ন সময় আওয়ামীলীগ সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে এসব নেতারা দীর্ঘ ১০ বছর যাবত অনুপস্থিত ছিলেন। হাসিনা বিরোধী আন্দোলনের মিছিল মিটিংয়ের শেষ সারিতেই তাদের দেখা মেলেনি। উল্টো এসব নেতারা আওয়ামীলীগের সাথে আতাত করে নিজেদের ব্যবসা বাণিজ্য নির্বিঘ্নে চালিয়ে গেছেন। হরতাল-অবরোধ চলাকলে নির্বিঘেœ তাদের পরিবহনগুলো রাস্তায় নামিয়ে হরতাল অবরোধ সফল করতে দেয়নি। এ সকল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কোন মামলা-মোকদ্দমাও হয়নি। কিন্তু ৫ আগষ্টের পর সকলেই সক্রিয় হয়ে ওঠেছেন। নিজেদের ত্যাগী দাবী করে ফেসবুকে সরব হয়েছেন। এ অবস্থায় সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি, থানা, পৌরসভা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড কমিটি গঠনে ২ ফেব্রুয়ারী কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীমকে আহবায়ক করে ১৮ সদস্য জেলা বিএনপি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়।এতে জেলার নেতাকর্মীদের মধ্যে আনন্দ-উচ্ছাস বিরাজ করে। বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

এ অবস্থায় শনিবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত একটি পত্রে নিস্ক্রীয় ৫ নেতাকর্মীকে সম্মেলন কমিটির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে বিএনপির ভেরিফাইডপেজে প্রকাশ করেন। প্রকাশ হওয়া মাত্রই জেলার নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। অনেকে এই নতুন সদস্যদের বয়কট করে নানা ধরনের পোস্ট করছেন।

নুর আলম নামক এক ব্যক্তি তার ফেসবুকে লিখেছেন, আওয়ামীলীগের সাথে আতাতকারী এবং আন্দোলন সংগ্রামে যার বিন্দুমাত্র ভুমিকা ছিল না সেই আওয়ামীলীগের রুহী আফজালকে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির নতুন সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করায় তা ঘৃনাভরে প্রত্যাখান করছি। সেই সাথে এই ধরনের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য রাহিদ মান্নান লেলিন বলেন, রুহী আফজাল গত ১৬ বছরে বিএনপির সাথে সম্পৃক্ত ছিল না। কখনো একঝলক মাঠে দেখা যায়নি। বিগত ১৬ বছরের বেলকুচি ও তাড়াশের এমপিদের সাথে মিলতাল করে চলে কাজকর্ম করেছেন। এমন একজন নারীকে কিভাবে সম্মেলন কমিটির সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হলো-আমাদের বোধগম্য নয়। আমরা ঘৃনাভরে প্রত্যাকান করছি। আমরা এর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ মিছিল করব।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু কোন মন্তব্য না করে উল্টো বলেন, আপনারা সংবাদ কর্মী আপনারাই ভাল জানেন কারা মাঠে ছিল আর কারা ছিল না। আপনারা সেভাবেই লিখবেন। এছাড়াও তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটি ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিই বিষয়টি নিয়ে ভাল বলতে পারবেন।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহবায়ক আমিরুল ইসলাম খান আলীম জানান, জেলা বিএনপির সিনিয়র কয়েকজন সাবেক নেতা ১৩জন নেতাকে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্যের জন্য সুপারিশ করেছে। এর মধ্য থেকে ৫জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এরা যদি ১০ বছরে আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহন না করে থাকে তাহলে এসব নেতারা কিভাবে সুপারিশ করলো?