বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি পাঠিয়ে সময় চেয়েছেন তিনি, যাতে বাংলাদেশ আমদানি বাড়িয়ে ও শুল্ক কাঠামো সংস্কার করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্য গড়ে তুলতে পারে।
সোমবার (৭ এপ্রিল) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে জানানো হয়, চিঠিতে ইউনূস উল্লেখ করেছেন, ট্রাম্পের অভিষেকের পরপরই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে এ আগ্রহের কথা জানিয়েছে। ১৭ কোটি মানুষের দ্রুত বর্ধনশীল বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য আমদানিতে বাংলাদেশ আন্তরিক আগ্রহী বলেও জানান তিনি।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশই প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিতে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে সই করেছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য— বিশেষ করে তুলা, গম, ভুট্টা ও সয়াবিন আমদানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই পণ্যগুলোর জন্য বাংলাদেশে একটি ডেডিকেটেড বন্ডেড ওয়্যারহাউজ চালুর কাজও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, যেখানে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার থাকবে।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি পণ্যে সবচেয়ে কম শুল্ক আরোপ করে বাংলাদেশ। তুলা, স্ক্র্যাপ লোহা, কৃষিপণ্যে শূন্য শুল্ক এবং অন্যান্য মার্কিন পণ্যে (যেমন গ্যাস টারবাইন, সেমিকন্ডাক্টর, চিকিৎসা যন্ত্রপাতি) ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক হ্রাসের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি জানান, অশুল্ক বাধা দূর করতে বাংলাদেশ প্যাকেজিং, লেবেলিং সহজিকরণ, পরীক্ষার বাধ্যবাধকতা হ্রাস এবং শুল্ক প্রক্রিয়া সরলীকরণের মতো বেশ কিছু সংস্কার করছে। স্টারলিংক চালুর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগের পথও খুলেছে বাংলাদেশ।
চিঠির শেষাংশে ইউনূস অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আগামী তিন মাসের মধ্যেই এসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হবে। এ সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক ভারস্যমূলক নীতিগত আলোচনাও সম্পন্ন করা হবে। তাই বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।