উত্তর আফ্রিকার সুদানের দারফুর অঞ্চলে র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর সাম্প্রতিক সহিংস হামলায় অন্তত ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ, যা তাদের মতে বিশ্বস্ত সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত সপ্তাহে দারফুরের এল-ফাশের শহরের আশপাশের শরণার্থী শিবিরে ভয়াবহ স্থল ও বিমান হামলা চালিয়েছে আরএসএফ। শহরটি এখনও সরকারি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা দারফুর অঞ্চলের শেষ বড় ঘাঁটি। এই নিয়ন্ত্রণ নিতে গিয়ে চালানো হামলায় শত শত মানুষ নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত ১৪৮টি মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত হয়েছে। তবে রোববারের হামলার তথ্য এখনও অন্তর্ভুক্ত হয়নি। তিনি আরও জানান, নিহতদের মধ্যে অন্তত ৯ জন ত্রাণকর্মী রয়েছেন।
জামজাম ও আবু শৌক শরণার্থী শিবির, যেখানে প্রায় সাত লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন, এই হামলার প্রধান লক্ষ্য ছিল। এই মানুষদের অনেকেই দারিদ্র্য, দুর্ভিক্ষ ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
আরএসএফ দাবি করেছে তারা বেসামরিকদের ওপর হামলা চালায়নি এবং শিবিরের দৃশ্যগুলো সাজানো হয়েছে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে। তবে পরদিন তারা নিজেরাই ঘোষণা করে, তারা শিবিরটি ‘মুক্ত করেছে’ এবং সেখানে সেনাবাহিনী বেসামরিকদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছিল বলে দাবি করে।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ চলছে, যা দেশের কোটি কোটি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে এবং এটিকে বিশ্বের অন্যতম মানবিক সংকটে পরিণত করেছে।
দারফুরের এল-ফাশের শহরটি এখনো সেনাবাহিনীর দখলে থাকা একমাত্র বড় শহর, যেটিকে প্রায় এক বছর ধরে ঘিরে রেখেছে আরএসএফ। আগামী মঙ্গলবার এই গৃহযুদ্ধ তৃতীয় বছরে পা দেবে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছেন, “এখনই সময় বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়ার। সব পক্ষকে সংঘাত থামাতে আলোচনার পথে আসতেই হবে।”