যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রাজিল থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন এবং একইসঙ্গে ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর বিরুদ্ধে চলমান বিচার কার্যক্রম বন্ধের দাবি তুলেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ট্রাম্প এসব কথা বলেন।
তিনি অভিযোগ করেন, ব্রাজিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর “আক্রমণ” চালাচ্ছে এবং বলসোনারোর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ২০২২ সালের নির্বাচনের ফলাফল উল্টে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বলসোনারো বর্তমানে বিচারের মুখে রয়েছেন।
ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা ট্রাম্পের বক্তব্যের জবাবে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ব্রাজিলের বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপ করা হলে তারা পাল্টা ব্যবস্থা নেবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।
গত সপ্তাহেও বলসোনারোর বিচার নিয়ে ট্রাম্প এবং ব্রাজিল সরকারের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। ট্রাম্প এটিকে “আন্তর্জাতিক লজ্জা” বলে অভিহিত করলে বলসোনারো তাকে প্রকাশ্যে ধন্যবাদ জানান।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্প চলতি সপ্তাহে আরও ২২টি দেশের বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও শ্রীলঙ্কা। তবে ব্রাজিলের ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত ৫০ শতাংশ শুল্ক অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় অনেক বেশি এবং পূর্বঘোষিত ১০ শতাংশ হার থেকেও অনেক বেড়ে গেছে।
ট্রাম্প বলেন, এই শুল্ক “বর্তমান সরকারের গুরুতর অন্যায় সংশোধনে প্রয়োজনীয়” এবং তিনি ব্রাজিলের ডিজিটাল বাণিজ্য নীতির ওপর মার্কিন আইনের ৩০১ ধারা অনুযায়ী তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দেবেন, যা শুল্ক আরোপের প্রক্রিয়ার একটি অংশ।
এর আগেও ২০১৯ সালে ট্রাম্প বলসোনারোর সরকারের প্রযুক্তি সংক্রান্ত কর আরোপের উদ্যোগের বিরুদ্ধে একই ধরনের অবস্থান নিয়েছিলেন। তার মতে, ব্রাজিল মার্কিন নির্বাচনী স্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে।
এছাড়া, ট্রাম্প অভিযোগ করেন যে, ব্রাজিলের আদালতের আদেশে তার কোম্পানি ‘ট্রাম্প মিডিয়া’-এর কিছু অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা হয়েছে, যা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী।
সম্প্রতি ব্রাজিলের সর্বোচ্চ আদালত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত কনটেন্টের দায়ভার কোম্পানিগুলোর ওপর চাপিয়ে দেয়ার রায় দেয়। এই সিদ্ধান্তের ফলে আরও উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
এদিকে, ট্রাম্প রিও ডি জেনেইরোতে অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনকেও তীব্র সমালোচনা করে বলেন, এই জোট “মার্কিনবিরোধী” এবং তাই এসব দেশের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা পাল্টা মন্তব্যে বলেন, ট্রাম্পকে বুঝতে হবে পৃথিবী বদলে গেছে এবং এখন আর কোনো “সম্রাট” জনগণ চায় না।