২০১০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে মুসলিম জনসংখ্যায় অভূতপূর্ব বৃদ্ধি ঘটেছে, যা আগামী ২৫ বছরের মধ্যে ভারতকে বিশ্বের সর্বাধিক মুসলিম জনসংখ্যার দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিউ রিসার্চ সেন্টার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক দশকে বিশ্বে মুসলিমদের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৩৪ কোটি ৭০ লাখ, যা অন্য যেকোনো ধর্মের তুলনায় দ্রুততম হারে বৃদ্ধি। ২০১০ সালে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২৩.৯ শতাংশ ছিল মুসলিম, ২০২০ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫.৬ শতাংশে। এই বৃদ্ধির পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে অধিক জন্মহারকে উল্লেখ করা হয়েছে, যদিও ধর্মান্তরের প্রভাবও রয়েছে, তবে তা সামান্য।
বিশ্বের যেসব অঞ্চলে মুসলিম জনসংখ্যা দ্রুত বেড়েছে তার মধ্যে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সবচেয়ে এগিয়ে। পিউ-এর পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে মুসলিম জনসংখ্যা পৌঁছাবে ২৮০ কোটিতে। একই সময়ে ইন্দোনেশিয়াকে ছাড়িয়ে ভারত হয়ে উঠবে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মুসলিম জনসংখ্যার দেশ।
প্রতিবেদনে ভারতের জনসংখ্যা পরিসংখ্যানও উঠে এসেছে। ২০১০ সালে দেশটির হিন্দু জনসংখ্যা ছিল মোট জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ, যা ২০২০ সালে কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছে ৭৯ শতাংশে। বিপরীতে মুসলিম জনসংখ্যা ১৪.৩ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৫.২ শতাংশ। এই দশকে ভারতে মুসলিমদের সংখ্যা বেড়েছে ৩ কোটি ৫৬ লাখ।
অন্যদিকে, বিশ্বজুড়ে হিন্দু জনসংখ্যার হার ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২০ সালে দাঁড়িয়েছে ১২০ কোটিতে, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১৪.৯ শতাংশ।
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা ২০১০ সালে ছিল ২১৮ কোটি, ২০২০ সালে তা বেড়ে হয়েছে ২৩০ কোটির কিছু বেশি। তবে শতকরা হারে ৩০.৬ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ২৮.৮ শতাংশ।
বৌদ্ধ জনসংখ্যা আগের চেয়ে কমেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চীনে জন্মনিয়ন্ত্রণ নীতির কড়াকড়ি এর প্রধান কারণ।
প্রতিবেদনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, মুসলিমদের পর সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা বেড়েছে নাস্তিকদের মধ্যে। ১০ বছরে ২৭ কোটি বেড়ে নাস্তিক জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯০ কোটিতে, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২৪.২ শতাংশ।