অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, এমন একটি বাংলাদেশই আমাদের কাম্য, যেখানে সব ধর্ম, জাতি ও সম্প্রদায়ের মানুষ সমান মর্যাদা নিয়ে বসবাস করতে পারবে।
রোববার (২০ জুলাই) রাঙামাটিতে এনসিপি আয়োজিত ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ উপলক্ষে পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশকে নানাভাবে বিভক্ত করে রাখা হয়েছে, যার একটি বড় শিকার পার্বত্য চট্টগ্রাম। বিভাজন এবং অস্থিরতা জিইয়ে রেখে একটি তৃতীয় পক্ষ বারবার ফায়দা লুটেছে, কিন্তু ভবিষ্যতে এই পক্ষকে আর সুযোগ দেওয়া হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ১৯৭২ সালের সংবিধানে সব জাতিগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বাঙালি জাতীয়তাবাদের ছত্রছায়ায় অন্যান্য গোষ্ঠীর মাঝে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে এবং ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ইসলাম ও অন্যান্য ধর্মের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করা হয়েছে। এনসিপি এমন একটি সংবিধান চায়, যেখানে সব ধর্ম ও জাতিগোষ্ঠী মর্যাদা পাবে।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সৌহার্দ্য ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চা জরুরি। রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকা স্বাভাবিক, তবে সহিংসতা নয়, গণতান্ত্রিকভাবে সমালোচনার চর্চা করতে হবে। আওয়ামী শাসনামলে দলে দলে দ্বন্দ্ব ও সংঘাতের কারণে জনজীবনে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল, সেই রাজনীতি যেন আর ফিরে না আসে। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সারজিস আলম। তিনি বলেন, রাজনীতিতে মতপার্থক্য থাকবে, তবে ভিন্নমতের প্রতি সহিংসতা বা প্রতিহিংসামূলক আচরণ ফ্যাসিবাদী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। নিজেদের ভুল শুধরে নিয়ে প্রবীণদের পরামর্শ গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তবে অহেতুক হুমকি বা তিরষ্কার গ্রহণযোগ্য নয়। আগামীর বাংলাদেশে শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতির রাজনীতিই কাম্য।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ইনসাফভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে হলে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের রাজনীতির চর্চা জরুরি। তরুণ প্রজন্ম যদি ভুল-ত্রুটি পেছনে ফেলে এগিয়ে আসে, তাহলে ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা সম্ভব। সেখানে ধর্ম, ভাষা ও জাতি নির্বিশেষে সবার অধিকার নিশ্চিত হবে।