শুক্রবার
২৪শে জানুয়ারি, ২০২৫
১০ই মাঘ, ১৪৩১

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

মিয়ানমারের মংডু শহর দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি, আটক সেনাপ্রধানসহ শত শত সৈন্য

Fresh News রিপোর্ট
ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ

মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি দাবি করেছে যে, তারা দেশের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মংডু শহরটি দখল করে নিয়েছে। এর পাশাপাশি, তারা রোহিঙ্গা যোদ্ধাসহ মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর শতাধিক সেনাকে আটক করার কথা জানিয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর কুখ্যাত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনও রয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।

 

আরাকান আর্মি (এএ) জানায়, তারা ৮ ডিসেম্বর, রোববার, মংডু শহরের সর্বশেষ জান্তা ঘাঁটি দখল করেছে। এই অভিযানে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনসহ শতাধিক সরকারি সৈন্যকে বন্দি করা হয়েছে। মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী এক প্রতিবেদনে জানায়, এই অভিযানটি বেশ কিছুদিন ধরে চলছিল, এবং শেষে ৫৫ দিনের তীব্র লড়াইয়ের পর বিদ্রোহীরা সফল হয়।

 

এই শহরের দখল নেওয়ার পর, মিয়ানমারের বাংলাদেশ সীমান্তের প্রায় ২৭০ কিলোমিটার এলাকা আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি মংডু শহরের কাছে অবস্থিত বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নং ৫ দখল করেছে, যা ছিল জান্তার একমাত্র সীমান্ত ঘাঁটি।

 

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর, মান্দালেতে বিক্ষোভকারীদের ওপর প্রাণঘাতী হামলা চালানোর জন্য তিনি বিশেষভাবে পরিচিত। এছাড়া, রাখাইন প্রদেশের উত্তরে রোহিঙ্গাদের প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

 

আরাকান আর্মি তাদের বক্তব্যে দাবি করেছে যে, এই সীমান্ত ঘাঁটি দখলে তারা বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করেছে। এদিকে, ঘাঁটিটি দখলের সময় জান্তা বাহিনীর সৈন্যরা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে তারা তাদের নেতৃত্বের কাছে আবেদনের মাধ্যমে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছিল। ভিডিওতে দেখা যায়, সৈন্যরা জানায়, তারা তিন মাস ধরে ঘাঁটিতে আটকে আছে, কিন্তু তাদের অপারেশন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তুন কোনো পদক্ষেপ নেননি।

 

যুদ্ধের সময় প্রায় ৪৫০ জন সরকারি সৈন্য নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। এছাড়া, আরাকান আর্মি জানায় যে, তাদের হাতে বন্দি হওয়া সেনাদের ছবি এবং জব্দ করা অস্ত্রের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে।

 

সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিন ইয়াও জানান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তুন তাঁর শাসনকালে সেনাদের প্রতি নির্দয় আচরণ করতেন এবং কোনো সৈন্য পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে গুলি চালানোর নির্দেশ দিতেন। তাঁর ওপর অভিযোগ রয়েছে যে তিনি চরমপন্থী আচরণ করতেন এবং সঠিক পরিস্থিতি ঊর্ধ্বতনদের কাছে তুলে ধরতে ব্যর্থ হতেন।

এই ঘটনার মাধ্যমে মিয়ানমারে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে চলমান লড়াই আরও তীব্র হয়ে উঠছে, এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে।