মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের একটি গ্রামে সামরিক বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ৪০ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ২০ জন। রাখাইনের রামরি দ্বীপে বুধবার এই হামলার ঘটনা ঘটে, যা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে চরম সংকট সৃষ্টি করেছে।
রাখাইনের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) দীর্ঘদিন ধরে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে আসছে। গত বছর এই বিদ্রোহীরা রাজ্যের বিস্তীর্ণ অংশের নিয়ন্ত্রণ নেয়। বুধবার দুপুরে সেনাবাহিনীর বিমান থেকে বোমা বর্ষণে কিয়াউক নি মাউ শহরের ৫০০-এরও বেশি বাড়িঘর পুড়ে যায়।
আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইং থু খা জানান, এই হামলায় হতাহতদের বেশিরভাগই সাধারণ মানুষ। স্থানীয় উদ্ধারকারী দলের এক সদস্য বলেন, ‘‘নিরাপত্তার অভাব এবং পরিবহন সমস্যার কারণে আহতদের যথাযথ চিকিৎসা প্রদান সম্ভব হচ্ছে না।’’
হামলার পর ধ্বংসাবশেষে পুড়ে যাওয়া ভবন, গাছপালা, এবং ভেঙে যাওয়া দেয়াল দেখা গেছে। বিস্মিত স্থানীয় বাসিন্দারা এসব ধ্বংসাবশেষের মধ্যেই দিন কাটাচ্ছেন। জান্তা বাহিনী হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
রামরি দ্বীপে চীনের অর্থায়নে নির্মাণাধীন গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প রয়েছে, যা ভারত মহাসাগরের প্রবেশদ্বার হিসাবে কাজ করবে। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে এর নির্মাণ কাজ স্থগিত রয়েছে।
মিয়ানমারে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর জান্তা-বিরোধী সংঘাত তীব্র রূপ নিয়েছে। আরাকান আর্মি ও অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর লড়াইয়ে দেশটির বিশাল অংশ তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, চলমান সংঘাতে মিয়ানমারে ৩৫ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং এই সংকট আরও ঘনীভূত হতে পারে।