শুক্রবার
২৪শে জানুয়ারি, ২০২৫
১০ই মাঘ, ১৪৩১

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

প্রবাসীদের ভোটাধিকার: সম্ভাবনা, চ্যালেঞ্জ ও উদ্যোগ

Fresh News রিপোর্ট
জানুয়ারি ১০, ২০২৫
১০:৪৯ পূর্বাহ্ণ

দেশের উচ্চ আদালত ১৯৯৮ সালে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকারকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিলেও, দীর্ঘ ২৬ বছরেও তা কার্যকর হয়নি। বিগত পাঁচ বছরে অন্তত ছয়বার এ উদ্যোগ নেওয়া হলেও দেড় থেকে দুই কোটি প্রবাসী ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত থেকেছেন। তবে বর্তমান নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকারের সুযোগ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে।

ইতোমধ্যে, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ৪০টি দেশে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের তথ্য চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে প্রবাসীদের ভোটার নিবন্ধন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র সরবরাহের পরিকল্পনা করছে ইসি। প্রবাসীদের ভোটাধিকারের ক্ষেত্রে পোস্টাল ব্যালট, সরাসরি ভোটদান, অনলাইন ভোটিং এবং প্রক্সি ভোটিং পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে কোন পদ্ধতি বাস্তবায়িত হবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ

বর্তমান পদ্ধতিতে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে প্রবাসীদের ভোটগ্রহণ সম্ভব হলেও, এর জটিলতা এবং সময়সাপেক্ষতার কারণে এটি অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। নতুন কোনো নিরাপদ প্রযুক্তি, যেমন ব্লকচেইন পদ্ধতি, ব্যবহার করা হলে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব। তবে, বিদ্যমান গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন ছাড়া প্রবাসীদের ভোটাধিকারের পথ সুগম হবে না।

পূর্ব অভিজ্ঞতা ও বর্তমান অগ্রগতি

২০১৯ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া ও যুক্তরাজ্যে প্রবাসীদের ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করেছিল ইসি। তবে করোনা মহামারির কারণে এ কার্যক্রম থেমে যায়। বর্তমানে সাতটি দেশে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম চালু রয়েছে, যেখানে ১৪ হাজার প্রবাসী ইতোমধ্যে নিবন্ধিত হয়েছেন। তবে তাদের জাতীয় নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের বিষয়ে এখনও অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।

প্রস্তাবিত সমাধান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

ইসি প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র দূতাবাসের মাধ্যমে সরবরাহ এবং পোস্টাল ব্যালটের পাশাপাশি ই-ভোটিং চালুর সুপারিশ করছে। ই-ভোটিং কার্যকর করতে হলে ইন্টারনেট নিরাপত্তা ও প্রযুক্তিগত অবকাঠামো উন্নত করতে হবে। এ বিষয়ে প্রবাসীদের মতামত নিতে সম্প্রতি অনলাইন সভার আয়োজন করা হয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রবাসীদের ভোটাধিকারের স্বপ্ন পূরণে আইন সংস্কার, প্রযুক্তি সংযুক্তি, এবং কার্যকর ব্যবস্থাপনার সমন্বয় অপরিহার্য। তবে এটি শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক উদ্যোগ নয়, বরং গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।