যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিককে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর পরিকল্পনা করছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। সম্ভাব্য উত্তরসূরিদের একটি শর্টলিস্ট তৈরি করা হয়েছে বলেও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস জানিয়েছে।
টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে যুক্তরাজ্যের লেবার সরকারের অর্থ ও নগরবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তবে বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ এবং একটি ফ্ল্যাট কেলেঙ্কারি ইস্যুতে তার পদত্যাগের দাবি উঠেছে। বিশেষত, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ বিষয়টি আরও জটিল করেছে।
দ্য টাইমসের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের ঘনিষ্ঠরা টিউলিপকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য বিকল্প প্রার্থীদের অনানুষ্ঠানিকভাবে বিবেচনা করেছেন। যদিও স্টারমার এবং তার অফিস থেকে টিউলিপের প্রতি পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করা হয়েছে এবং সম্ভাব্য প্রার্থীদের শর্টলিস্ট তৈরির বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে।
টিউলিপ সিদ্দিক নিজেই তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে ফ্ল্যাট কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতির অভিযোগে বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির এমপিরা তার পদত্যাগের দাবি তুলেছেন। বিশেষত, টোরি এমপি বব ব্ল্যাকম্যান বলেছেন, টিউলিপকে তার সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে, অন্যথায় তিনি মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন না।
ফ্ল্যাট কেলেঙ্কারির সূত্রপাত হয় ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের একটি প্রতিবেদনের মাধ্যমে। প্রতিবেদনে বলা হয়, লন্ডনের কিং’স ক্রস এলাকায় একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ২০০৪ সালে টিউলিপকে উপহার দেওয়া হয়েছিল। ফ্ল্যাটটি বাংলাদেশের ডেভেলপার আবদুল মোতালিফের কাছ থেকে পাওয়া। তিনি শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফ্ল্যাটটির ক্রয়মূল্য ছিল ১ লাখ ৯৫ হাজার পাউন্ড, যা একই এলাকায় বাজার মূল্যের তুলনায় অনেক কম। উপহার হিসেবে পাওয়া এই ফ্ল্যাট থেকে বছরে ৯০ হাজার পাউন্ড আয় করছেন টিউলিপ। তবে বিষয়টি তার নির্বাচনী হলফনামায় উল্লেখ করা হয়নি।
বর্তমানে টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যে লেবার পার্টির পাশাপাশি অতীতে আওয়ামী লীগের ইউরোপীয় শাখার লবিং ইউনিটে কাজ করেছেন। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এবং পদত্যাগের দাবির প্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে বিতর্ক তীব্র আকার ধারণ করেছে।