শুক্রবার
২৪শে জানুয়ারি, ২০২৫
১০ই মাঘ, ১৪৩১

আমরা জনতার পক্ষে সত্য বলি

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে সরকারের দোদুল্যমান অবস্থান

Fresh News রিপোর্ট
জানুয়ারি ১৫, ২০২৫
১০:৫১ পূর্বাহ্ণ

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি। সংবিধান সংশোধন বা পুনর্লিখনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতানৈক্যের কারণে এ প্রক্রিয়া জটিল হয়ে উঠেছে।

সরকারের পক্ষ থেকে এ ঘোষণাপত্র প্রকাশের দায়িত্ব নেওয়া হবে কি না, তা নিয়েই রয়েছে দোলাচল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি দীর্ঘদিন ধরে এ ঘোষণাপত্রের দাবি জানিয়ে এলেও ১৫ জানুয়ারির মধ্যে এটি প্রকাশের আলটিমেটাম দিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। তবে আজকের মধ্যে সরকারের কোনো উদ্যোগ না থাকায় আন্দোলনকারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

সরকারি সূত্রে জানা যায়, এ ঘোষণাপত্র রাজনৈতিক দল এবং অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে সর্বজনগ্রহণযোগ্যভাবে প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে। এ লক্ষ্যে আগামীকাল সর্বদলীয় বৈঠকের আয়োজন করার কথা বলা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত আলোচনা বা প্রক্রিয়া সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো অগ্রগতি হয়নি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ৩১ ডিসেম্বর তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে চাইলেও সরকারের আশ্বাসে তা স্থগিত করে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছিল। এ সময়ের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে সাড়া না পাওয়ায় তারা নতুন কর্মসূচি গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

সংবিধান সংশোধন বা পুনর্লিখনের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়েছে। বিএনপি এবং বামপন্থি দলগুলোর একটি বড় অংশ সংবিধান পুনর্লিখনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে, যেখানে ইসলামপন্থি দলগুলো পুনর্লিখনের দাবিতে অনড়। এ ছাড়া বিদ্যমান সংবিধানের পরিবর্তে নতুন গণপরিষদ নির্বাচন এবং একটি গণতান্ত্রিক সংবিধানের দাবি তুলেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম জানিয়েছেন, ঘোষণাপত্রের খসড়া প্রণয়ন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য প্রস্তাব আনার চেষ্টা চলছে। তবে আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেছেন, সরকার সময়ক্ষেপণ করে এ প্রক্রিয়া জটিল করে তুলছে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেছেন, সরকার বিষয়টি নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে এবং কোনো অগ্রগতি নেই। অন্যদিকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, আজকের সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

এ প্রেক্ষাপটে আন্দোলনকারীদের দাবি এবং সরকারের দোদুল্যমানতা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে জোর আলোচনা। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা ঘোষণার পর দেওয়া ঘোষণাপত্রের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তারা দ্রুত একটি সিদ্ধান্ত নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।